সাগর: চলতি গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সমুদ্রে, বিশেষ করে সৈকত লাগোয়া অঞ্চলে হোভারক্র্যাফট মোতায়েন করে নজরদারি চালাচ্ছে বাহিনী। এই হোভারক্র্যাফট হল একটি উভযান। অর্থাৎ, এই যান জল এবং স্থল-- উভয় জায়গায় সমান স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে চলতে পারে। বলাই বাহুল্য এই যান চালাতে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন।
উপকূলরক্ষী বাহিনীতে বর্তমানে এই ধরনের যানের বহু পাইলট রয়েছেন। যাঁদের পোশাকী নাম -- হোভার পাইলট। এর মধ্যে ৭ জন মহিলা। এই সাতজনের মধ্যে আবার দুজনের পোস্টিং হলদিয়ায়। সর্বোপরি, এই দুজনই এখন গঙ্গাসাগর মেলায় হোভারক্র্যাফট নিয়ে দিনরাত সমুদ্রে পাড়ি দিচ্ছেন। এই দুই বীরাঙ্গনার মধ্যে একজন শ্রুতি মোহন জৈনপুর এবং দ্বিতীয়জন স্নেহা কাটিয়াত।
শ্রুতি ও স্নেহা দুজনই বর্তমানে বাহিনীর ১৮৮ স্কোয়াড্রনে অ্যাসিস্টেন্ট কমান্ডান্ট পদে কর্মরত। আদতে মুম্বইয়ের বাসিন্দা শ্রুতি। প্রাথমিক পড়াশোনা সেখানেই। এরপর চেন্নাই থেকে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক লাভ করেন। কিন্তু, ছোটবেলা থেকেই ইউনিফর্মের প্রতি ভালবাসা ছিল শ্রুতির।



ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার (বার্ক)-এর বিজ্ঞানী ছিলেন বাবা। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। ফলে, দেশপ্রেমটা রক্তের মধ্যেই ছিল বলে স্বীকার করলেন এই তরুণী। বললেন, সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রবল ইচ্ছা ছিল। তাই, উপকূলরক্ষী বাহিনীর সুযোগ চলে আসায়, আর দুবার ভাবেননি। ২০১৩ সালে যোগ দেন বাহিনীতে।
প্রথমে জেনারেল অফিসার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড লজিস্টিক্স) বিভাগে ছিলেন। পরে, সি সার্ভিস-এর জন্য স্বেচ্ছায় নিজের নাম নথিভুক্ত করেন। জানান, গত জুন মাস থেকে তিনি হোভার পাইলট হিসেবে কর্মরত। এর আগে, বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনি হিসেবে ছিলেন। কিন্তু, পাইলট হিসেবে গঙ্গাসাগরই তাঁর প্রথম বড় অ্যাসাইনমেন্ট।
মহিলা পাইলট প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় ব্যাচে কোয়ালিফাই করেছিলেন শ্রুতি। এক্ষেত্রে, তাঁর পূর্বসূরী হলেন স্নেহা। তিনি প্রথম ব্যাচে প্রশিক্ষণ নেন। এই তরুণী উত্তরাখণ্ডের পিথারাগড়ের বাসিন্দা। বাবা-মা দুজনই শিক্ষাজগতের সঙ্গে জড়িত। তিনি তাঁর পরিবারের প্রথম, যে বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। ২০১১ সালে উপকূলরক্ষী বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। প্রথম বছর প্রশিক্ষণ। তার পর বিভিন্ন সেক্টরে ছিলেন স্নেহা। গত আড়াই বছর ধরে এই হলদিয়াতে পোস্টিংয়ে রয়েছেন এই মহিলা অফিসার।