কলকাতা ও দার্জিলিং: কলকাতায় রাজ্য বিজেপি সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করলেন মোর্চার প্রতিনিধিরা। দিলেন জিটিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার হুমকি। কাল পাহাড়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় অনশনে বসবেন গুরুংরা।
সরকার-মোর্চা টানাপোড়েনে পাহাড় এখন সরগরম। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে দাঁড়িয়ে বারবার মোর্চার বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন। কখনও মদন তামাং খুনের প্রসঙ্গ টানছেন! কখনও জিটিএ-র দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন!
এই পরিস্থিতিতে চাপে পড়ে কি পাহাড়ে সহানুভূতি কুড়োতে জিটিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে মোর্চা? পায়ের তলার হারানো মাটি ফিরে পেতে কি ফের গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনে সুড়সুড়ি দিতে পারেন গুরুংরা? তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মোর্চার পাশে রয়েছে বিজেপি।
সামনেই জিটিএ নির্বাচন। মোর্চার বিরুদ্ধে কাজ না করার বিস্তর অভিযোগও রয়েছে। তৃণমূল সরকারের সঙ্গে তাদের সংঘাত ক্রমেই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে মোর্চা নেতৃত্বের গলায়।
গোর্খা জমনুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, জিটিএ-তে থেকে লাভ নেই। কাজ করতে দিচ্ছে না সরকার। কিন্তু, প্রশ্ন হল, পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার মুহূর্তে কি মোর্চা বুঝতে পারল, তাদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না? এরইমধ্যে বুধবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করেন মোর্চার প্রতিনিধিরা।
দিলীপ ঘোষ অবশ্য তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আমাদের জানিয়েছে, জিটিএ থেকে বেরিয়ে আসবে ১০ জনই। প্রত্যাশা পূরণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই বেরিয়ে আসবে। ফের আন্দোলনের রাস্তায় যাবে। আমাদের জোট আছে। গোর্খাল্যান্ডের দাবি। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার।
মোর্চার সহযোগিতায় দার্জিলিং থেকে জিতে সাংসদ-মন্ত্রী হওয়া বিজেপির সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া তো প্রকাশ্যেই গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে সওয়াল করেছেন! বিজেপি সাংসদের মুখে শোনা গিয়েছিল, ‘‘পঞ্জাবিরা পঞ্জাবের কথা বলতে পারেন। বাঙালিরা বলতে পারেন আমরা বাংলার। একই ভাবে বিহার, কেরল, তামিলনাডুর লোক বলতে পারেন তাঁরা ওই সব প্রদেশের বাসিন্দা। গোর্খারা কবে বলবেন ‘আমি গোর্খাল্যান্ডের’? যে স্বপ্ন লক্ষ-কোটি মানুষ দেখছেন, তা পূরণ হওয়া উচিত।’’
পদ্ম শিবির পাশে দাঁড়ানোয় বেজায় খুশি মোর্চা। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী যখন রাজভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন, তখন অদূরে অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গুরুংরা! গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সভাপতি বলেন, মোর্চার দাবি, পাহাড়ে বাংলা আবশ্যিক হবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করেছেন, সেবিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে লিখিত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নাহলে মোর্চা আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করার পরও, লিখিত চাওয়ার মানে কি নতুন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা? তাহলে কি মোর্চার আন্দোলনের পরবর্তী ধাপই হল জিটিএ ত্যাগ? এমনটা হলে সরকার কী করতে পারে?
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, জিটিএ-র ভোট পিছিয়ে দিয়ে, প্রশাসক বসিয়ে পাহাড়ে ঢালাও উন্নয়ন করে মন জয়ের চেষ্টা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর ভোট হলে মোর্চার জিতে আসা নিয়ে সংশয় তৈরি হতে পারে।
পাহাড়ে গিয়ে মদন তামাং হত্যা মামলার তদন্ত হত্যাকাণ্ড নিয়েও সুর চড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাইকোর্টেও মামলা চলছে। আদালত ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে, চার্জগঠনের একদিন আগে থেকে এই মামলার অভিযুক্তদের কলকাতা পুলিশের এলাকায় থাকতে হবে। অর্থাৎ জিটিএ নির্বাচনের আগে এই চার্জগঠন হলে গুরুং সহ অভিযুক্ত নেতারা পাহাড়ে থাকতেই পারবেন না।
এমনটা হলে কি গুরুংরা পারবেন জিটিএ-র ভোটে জিতে আসতে? সব মিলিয়ে পাহাড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে।
দিলীপের সঙ্গে বৈঠক, জিটিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার হুমকি মোর্চার, বৃহস্পতিবার পাহাড়ে অনশনে গুরুংরা
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
07 Jun 2017 08:30 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -