কমলকৃষ্ণ দে, মেমারি : করোনা সংক্রমিতের ক্ষেত্রে শরীরের বাইরে যাবে না ভাইরাস। আবার কোনওভাবেই বাইরে থাকা ভাইরাস শ্বাসের মাধ্যমে শরীরের প্রবেশ করবে না যিনি কোভিড আক্রান্ত নন, তার ক্ষেত্রে। বিশেষ ধরণের ভাইরাস প্রতিরোধকারী এক মাস্ক বানিয়ে গুগলের সেরার সেরাদের তালিকায় বাংলার মেয়ে। স্কুলের ফিজিক্সের পঠন-পাঠন ও উপস্থিতি বুদ্ধি, এই দুইয়ের সম্বলেই দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দিগন্তিকা বসু।
মেমারির বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যামন্দিরের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিগন্তিকার বানানো বিশেষ মাস্ক স্থান করে নিয়েছে গুগল আর্টস অ্যান্ড কালচারের সেরা দশ 'অনুপ্রেরণামূলক উদ্ভাবন'-র মধ্যে। 'কন্যাশ্রী' দিগন্তিকার বানানো এই মাস্কের বিশেষত্ব ঠিক কী!
দিগন্তিকার বানানো ভাইরাস প্রতিরোধক এই মাস্কে রয়েছে বিশেষ এক ধরণের কেমিক্যাল চেম্বার। যার সাহায্যে মাস্ক পরিহিত কারোর ক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়ার সময় কোনওভাবে ভাইরাস বাতাসে ভেসে এলেও কেমিক্যাল চেম্বারে তা ধ্বংস হয়ে যাবে। আবার কোভিড আক্রান্ত কারোর ক্ষেত্রে একইভাবে চেম্বারে প্রথমে ভাইরাস ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় তা আর বাতাসে গিয়ে মিশবে না। সঙ্গে আরও একটি এয়ার আইনাইজার অংশও রয়েছে মাস্কের সঙ্গে। যার সাহায্যে ধুলো-বালি ছেঁকে মুক্ত বাতাস নিতে সাহায্য করবে দিগন্তিকার তৈরি এই মাস্ক।
স্বীকৃতির পাশাপাশি গুগলের দাবি, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক এই মাস্ককে দ্রুত বাজারজাত করার চেষ্টাও শুরু করছে। জানা গিয়েছে, এই বিশেষ ধরণের মাস্কের দাম হতে পারে ২৫০ টাকা।
ক্লাসে ফোরে পড়ার সময় সুন্দরবনের মানুষকে বাঘের শিকার থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে ৩৬০ ডিগ্রি দেখার কাজে ব্যবহার করা যায় এমন চশমা প্রথম বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন দিগন্তিকা। তারপর একাধিক আবিষ্কার করেছেন তিনি। রাজ্যস্তরের গণ্ডি টপকে পাঁচটি জাতীয় ও একটি আন্তর্জদাতিক স্বীকৃতিও রয়েছে তাঁর।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের নামাঙ্কিত ইউনাইটেড মাইন্ড চিলড্রেন ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড ইনোভেশমন পুরস্কারও পেয়েছে সে। গত মার্চে টানা মাস্ক পরার জেরে কানে তৈরি হওয়া ব্যথা কমানোর এক যন্ত্র তৈরি করে জাতীয় স্বীকৃতি পেয়েছিল সে। তবে আগেও একাধিক 'ইনোভেশন' ছাপিয়ে দিগন্তিকার তৈরি এই বিশেষ মাস্ক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে দিগন্তিকাকে।