কলকাতা: ‘গোর্খাল্যান্ড’ ইস্যুতে এবার হস্তক্ষেপ কেন্দ্রের। এই বিষয়ে আলোচনা চেয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। আগামী ৭ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ডাক৷

সূত্রের খবর,ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, জিটিএ-র প্রধান সচিব, দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে আগামী ৭ অক্টোবর বুধবার সকাল ১১টায় নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক৷ কারণ এর আগেও একবার কেন্দ্র জিটিএ নিয়ে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ডাক দিয়েছিল৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠক বাতিল হয়ে যায়৷

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডির তত্ত্বাবধানে বৈঠক হবে। বুধবারের বৈঠকে রাজ্য সরকারের তরফে কেউ থাকবেন কিনা, সরকারি তরফে তা এখনও জানানো হয়নি। ২১-এর ভোটে মোদি সরকার ফের পাহাড় ইস্যুকে হাতিয়ার করতে চাইছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

বিমল গুরুঙ্গের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র। ৭ অক্টোবর সকাল ১১টায় ‘গোর্খাল্যান্ড’ ইস্যুতে বৈঠক হবে বলে সূত্রের খবর।  প্রসঙ্গত,জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দুটো পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার পরই কেন্দ্রের কাছে গোর্খাল্যান্ডের দাবি জানান দার্জিলিং-এর সাংসদ রাজু বিস্ত৷ গোর্খাল্যান্ড না হলেও একটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি জানিয়েছেন তিনি৷ কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপে গোর্খাল্যান্ড তৈরির বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

মন্ত্রী ও তৃণমূল বিধায়ক গৌতম দেব বলেন, 'এর পিছনে ভোট রাজনীতিকেই দেখতে পাচ্ছে তৃণমূল ও বিনয় তামাংপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। ভোটের আগে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা, মমতা যে পাহাড়ে উন্নয়ন, যে স্থিতাবস্থা এসেছে, এবং পাহাড়কে রাজ্য থেকে আলাদা করলেই মমতা আটকেছেন, ২০১৪-র আগেও একই উদ্যোগ, ওদের কাছে নির্বাচনই বড়, দেশ বড় নয়'। জিটিএ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক, বিনয়পন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা অনীক থাপা বলেছেন, 'এটা বিভ্রান্তি করতে বৈঠক ডাকা হয়েছে। প্রতি নির্বাচনের আগে পাহাড়ের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এটা করা হয়। রাজনৈতিক লেভেলে হওয়া উচিত ছিল। স্বরাষ্ট্র লেভেলে হলে কী লাভ হবে। লাদাখ, কাশ্মীর হয়েছে, এখানেও তো তাই হতে পারে। এখানে শুধু স্টানবাজি। যাব কি যাব না, পরে সিদ্ধান্ত।' যদিও কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিমল গুরুংপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি জানিয়েছেন, 'কেন্দ্রের চিঠি পেয়েছি। সদর্থক পদক্ষেপ। আমাদের ২জন প্রতিনিধি বৈঠকে যোগ দেবেন।' যদিও বিজেপির দাবি, পাহাড় ভাগ না করেই সমস্যার সমাধানের পক্ষপাতী তারা। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, 'গোর্খাল্যান্ড হবে না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যে থেকেই গোর্খা ভাই-বোনেদের কিভাবে রাজনৈতিক ক্ষমতা আরও দেওয়া যায় এবং রাজনৈতিকভাবে সমাধান বের করা যায় তার জন্য কেন্দ্র এ পদক্ষেপ নিয়েছে। গৌতম দেব নিজেই বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন তার নির্দেশেই পাহাড়ে পুলিশ কিভাবে অত্যাচার করেছে'।