নলহাটি: 'যেখানে বিজেপিকে ভোট, সেখানে বন্ধ করে দিন উন্নয়নের কাজ।' নলহাটিতে দলীয় সভায় অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশ ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক। অনুন্নয়নের জন্যই তৃণমূলের উপর ক্ষুব্ধ মানুষ। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে পাল্টা কটাক্ষ বিজেপির।


ফের বিতর্ক, ফের অনুব্রত মণ্ডল। নলহাটির সভায় নির্বাচন নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য। রবিবার নলহাটি ১ নম্বর ব্লকে তৃণমূলের বুথভিত্তিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বাহাদুর পঞ্চায়েত এলাকায় দলীয় কর্মীর মুখে বিজেপির কাছে হারানো ভোট পুনরুদ্ধার সম্ভব নয় শুনেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।

৮৮ নং বুথ সভাপতিকে অনুব্রত প্রশ্ন করেন, 'কি রেজাল্ট হয়েছে?' তৃণমূল নেতা উত্তর দেন, '৫৫০ ভোটে হেরে আছি।' অনুব্রত জানতে চান, 'রিকভারি হবে?'
৮৮ বুথ সভাপতি বলেন,'হিন্দু প্রধান গ্রাম। সব বিজেপি। হবে না স্যার।' অনুব্রত প্রশ্ন করেন, 'কেন ওখানে উন্নয়ন হয়নি?' ৮৮ বুথ সভাপতি বলেন, 'অনেক করেছি। কিন্তু ওরা দেবে না।' সব শুনে অনুব্রতর মন্তব্য, 'তাহলে উন্নয়ন বন্ধ করে দিন।'

অনুব্রতর সাফ যুক্তি কিছু পেতে হলে কিছু তো দিতে হবেই!

৯৫ নং বুথ সভাপতিকে অনুব্রত প্রশ্ন করেন, 'কত ভোটে হেরে আছো।' ৯৫ নং বুথ সভাপতি উত্তর দেন, '৩৭১ ভোটে।' অনুব্রত প্রশ্ন করেন, 'কেন হারলে?' ৯৫ নং বুথ সভাপতি বলেন, 'আমাদের গ্রামে একটা নদী আছে, যাতায়াতের জন্য একটা ব্রিজ দরকার। আমারা ২০১৩ সালে করে দেব বলেছিলাম। কিন্তু হয়নি। সেজন্য আমরা পিছিয়ে আছি। মানুষ আমাদেরকে ভালোবাসে না।'  অনুব্রত বলেন, '৩৪ বছর বামফ্রন্ট করে নাই,৭০ বছর কংগ্রেস কিছু করে নাই, ২০১৪ সালে বিজেপি করে নাই। ২১ সালে পরে দেখব। কিছু দিতে গেলে কিছু পেতে হয়। একতরফা হয় না। আগে দাও নিশ্চয় দেব।'

বিজেপির অবশ্য কটাক্ষ, এতদিন কোনও কাজ করেনি বলেই তৃণমূলের উপর ক্ষুব্ধ মানুষ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, 'অনুন্নয়নের রাজনীতি শুরু করেছে টিএমসিপি। বিভিন্ন জেলার পঞ্চায়েত সমিতিতে যেখানে বিজেপি জিতেছে, সেখানে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সমিতির সদস্যদের জেলে ঢোকানো হচ্ছে।'

এই প্রথম নয়, এর আগেও ভোট নেই, তো কাজও নেই-এর ফরমান ঘিরে বিতর্কে জড়িয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। যদিও সেবার এক সপ্তাহের মধ্যেই সুর বদলে মহম্মদবাজারের কর্মিসভার মঞ্চ থেকে দল না দেখে রাস্তার কাজ করার নির্দেশ দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। কিন্তু, সেই অনুব্রতর মুখেই ফের বিজেপিকে ভোট দিলে উন্নয়নের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ। যা ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক।