অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: তখন সবেমাত্র সাত পাক শেষ করে প্রেয়সীর সিঁথিতে সিঁদুর তুলছেন বছর চব্বিশের যুবক। সেই সময় ছাদনাতলায় হঠাৎ হাজির স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। পাত্রের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ, এখনই ‘সেফ হোম’-এ যেতে হবে! শোনা মাত্রই যেন আকাশ থেকে পড়ার মতো অবস্থা নব দম্পতির। মাথায় হাত মেয়ের বাড়ির। পাত্রের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ শোনামাত্রই ফাঁকা হয়ে যায় গোটা চত্বর। ত্রিসীমানায় থাকেনি বরযাত্রী। এমনকি যে গাড়ি করে পাত্র বিয়ে করতে এসেছিলেন সেই চালকও উধাও। শেষে কোনও মতে বিয়ের বাকি নিয়ম সম্পন্ন করে নববধূকে নিয়ে বাইকে করে নিজের বাড়ি ফেরেন যুবক। সেখান থেকে তাঁকে ‘সেফ হোম’-এ নিয়ে যায় স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা। ঘটনা ঝাড়গ্রামের জামবনির।


সপ্তাহ দুয়েক আগে গুজরাত থেকে ফেরেন জামবনির শালপাতারা গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক। বৃহস্পতিবার হিজলি গ্রামে বিয়ে করতে আসার আগে করোনা পরীক্ষা করান তিনি। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট জানিয়ে দেওয়া হবে। ২ দিন পরও কোনও এসএমএস না আসায় আর অপেক্ষা না করেই বিয়ে করতে চলে আসেন তিনি। এদিকে পাত্রী ঝাড়গ্রামের রাজ কলেজের (মহিলা) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীও প্রেমিককে পেতে একেবারে উতলা। গত ১৩ অগস্ট দুপুরেই তাঁদের বিয়ে হয়। আর সেদিনই নিজের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট সম্পর্কে অবগত হন পাত্র।


এই পরিস্থিতিতে নতুন বউ নিয়ে বাড়ি ফিরলেও যুবককে যেতে হয়েছে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ায় ‘সেফ হোম’-এ। সেখানে কোয়ারেন্টিন থাকবেন তিনি। পরিবার অন্তত এটা ভেবে খুশি, যে বিয়েটা হয়েছে। তবে মন ভাল নেই নববধূর। “আগে জানতেন না, সেদিনই সবটা জেনেছেন”, বিবর্ণ মুখে জানিয়েছেন তিনি।