কলকাতা: সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে ফের হাইকোর্টের ভর্ত্সনার মুখে রাজ্য সরকার। সিভিক ভলান্টিয়ার পদে নিয়োগের জন্য একদিনে কীভাবে বাঁকুড়ার বারিকুল ও সারেঙ্গা থানায় শয়ে শয়ে প্রার্থীর ইন্টারভিউ নেওয়া হল, তা জানতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে নথি তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার সেই নথি দেখে রাজ্যকে তীব্র ভর্তসনা করে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রাজ্যে প্রশাসনিক অরাজকতা চলছে। কাগজপত্র দেখে মনে হচ্ছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ। ২০১২-র ১৩ এপ্রিল সারেঙ্গা থানায় ১৩৫১ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। যাঁরা ইন্টারভিউ নেন, তাঁরা কি সুপারম্যান? সবার জন্য যদি এক মিনিটও সময় দেওয়া হয়, তাহলে ২২ ঘণ্টা ৩১ মিনিট লাগে। ইন্টারভিউ কি রাত ৩টে থেকে শুরু হয়েছিল? যাঁরা নেন, তাঁরা স্নান-খাওয়া করেননি? শৌচালয়ে যাননি?

 

রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার পিছু প্রতিদিন খরচ হয় ১৪১ টাকা ৭৪ পয়সা খরচ। ১ লক্ষ ২০ হাজার সিভিক ভলান্টিয়ারের জন্য প্রতিদিন সরকারের খরচ হয় ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এই প্রসঙ্গ তুলে বিচারপতি বলেন, মনে রাখবেন এই টাকা মানুষের করের টাকা। সরকারের ঘরের টাকা নয়। ভেবেছিলাম, ভুলভ্রান্তি সামনে আসার পর সরকার তা স্বীকার করে সমাধান করবে। কিন্তু তা করেনি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আসলে সরকারের চেকস অ্যান্ড ব্যালেন্সের কোনও ব্যবস্থা নেই।

 

সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে মামলার শুনানিতে গত ২৮ এপ্রিল নিয়োগের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বড় কেলেঙ্কারি’ বলে মন্তব্য করেন।

একদিনে বাঁকুড়ার বারিকুল থানায় ৮৭৫ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে শুনে গত ১৬ মে রাজ্যকে তীব্র ভর্ত্সনা করে আদালত। বিচারপতি মন্তব্য করেন, একদিনে ৮৭৫ জনের ইন্টারভিউ? ইন্টারভিউ কে নিয়েছিলেন? তাঁর কটা মাথা? হাইকোর্টের বিচারপতি হওয়ার জন্য সেই নাম আমি সুপারিশ করব। তাহলে বকেয়া মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দেয়, নিয়োগ প্রক্রিয়ার নথি জমা দেওয়ার। সেই নথিই এদিন জমা দেয় রাজ্য সরকার। তা দেখেই এদিন ফের রাজ্য সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন বিচারপতি।

 

আগামী শুক্রবার মামলার রায়দান।