নয়াদিল্লি: হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যু মামলায় সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিল রাজ্য। এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে নিম্ন আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে সিআইডি। গত বছরের অগাস্টে এ নিয়ে নোটিস জারি করে সুপ্রিম কোর্ট।

গত বছর ১৩ জুলাই বন্ধ দোকানের সামনে উদ্ধার হয় হেমতাবাদের বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্রনাথ রায়ের হাত বাঁধা ঝুলন্ত দেহ। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ থেকে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন দেবেন্দ্রনাথ রায়। ২০১৯-এ তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।

তৃণমূল এই মৃত্যু আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও বিজেপি বলে, তাঁকে খুন করা হয়েছে। দেবেন্দ্রনাথ রায়ের পরিবারের দাবি, ঘটনার দিন রাত ১টা নাগাদ কয়েকজন মোটর বাইক আরোহী তাঁকে বালিয়ার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরদিন সকালে বালিয়া মোড়ে একটি বন্ধ দোকান ঘরের বারান্দা থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের দাবি, রাত দশটা পর্যন্ত দেবেন্দ্রনাথবাবু স্থানীয় চায়ের দোকানে ছিলেন। তারপর রাত একটা নাগাদ একটি মোটর বাইক তাঁর বাড়ির দিকে যায়। এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় পুলিশ সুপার দাবি করেন, দেবেন্দ্রনাথের পকেট থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সুইসাইড নোটে বেশ কিছু নামের উল্লেখ রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু বিধায়কের স্ত্রী প্রশ্ন করেন, আত্মহত্যা হলে হাত বাঁধা কেন? বিজেপিও ঘটনার সিবিআই তদন্তর দাবি করে। কিন্তু সিবিআইয়ের বদলে রাজ্য সরকার সিআইডিকে বিধায়ক মৃত্যুর তদন্তভার দেয়। দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতিবাদে পরদিন ১২ ঘণ্টা উত্তরবঙ্গ বন্ধের ডাক দেয় বিজেপি।

তবে তাঁর ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, বিধায়কের দেহে অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই, গলার ফাঁসের কারণেই মারা গিয়েছেন দেবেন্দ্রনাথ। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কাউকে জোর করে মারা হলে, দাগ একটানা থাকত। কিন্তু একটানা নয় এমন দাগ আত্মহত্যার ইঙ্গিত দেয়। মৃত্যুর পর ঝোলানো হয়নি, গলায় ফাঁসের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।