মোহন দাস, আরামবাগ: প্রবল বৃষ্টিতে হুগলির গোঘাটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বহু গ্রাম প্লাবিত। কয়েক হাজার হেক্টর চাষের জমি জলমগ্ন। নষ্ট হয়ে গিয়েছে সবজি। একাধিক রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে জল। বেশ কয়েকটি এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত গোঘাটের নকুন্ডা ও বালি গ্রাম পঞ্চায়েত। টানা বৃষ্টি ও বাঁকুড়া থেকে জল ঢোকায় গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।
নতুন করে বৃষ্টি না হলেও দক্ষিণবঙ্গের একাংশে জল-যন্ত্রণার ছবি বদলাচ্ছে না। অন্যদিকে, আরামবাগ শহরে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দ্বারকেশ্বরের জল বাড়ায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। বাঁধ ভেঙে শহর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই দ্বারকেশ্বরের বাঁধ উপচে আরামবাগ পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে জল ঢুকতে শুরু করেছে। প্লাবিত বিস্তীর্ণ এলাকা। বাঁধের উঁচু জায়গায় ত্রিপল টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক পরিবার। আরামবাগের মায়াপুরে আরামবাগ-কলকাতা রাজ্য সড়কের ওপর দিয়েও বইছে জল।
তবে এই ছবি শুধুমাত্র এক জেলাতেই সীমাবদ্ধ তা নয়। পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম থেকে হাওড়া দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতে এখনও রয়েছে জলছবি। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা, দাসপুর, ঘাটালে জল-যন্ত্রণা অব্যাহত। চন্দ্রকোণায় শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্রায় ৫০টা গ্রাম প্লাবিত। শিলাবতীর পাশাপাশি ঝুমি নদীর জলে প্লাবিত ঘাটালের মনসুকা, দীর্ঘগ্রাম-সহ ৫-৬টি গ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। একই অবস্থা দাসপুরেও।নাড়াজোলের কাছে বাঁধ ভেঙে জলবন্দি বেশ কয়েকটি গ্রাম। গতকাল রাতে উদ্ধারকাজ চালিয়ে বহু মানুষকে উদ্ধার করে এনডিআরএফ।
টানা বৃষ্টিতে বীরভূমের একাধিক নদীর জল বেড়েছে। লাভপুর-কাটোয়া রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে বইছে কুয়ে নদীর জল। ফলে যান চলাচল বন্ধ। রেললাইন ধরে ঝুঁকির পারাপার করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি, লাভপুরের ঠিবা অঞ্চলে নদী বাঁধের জল উপচে প্লাবিত তীরবর্তী একাধিক গ্রাম। বন্যার আশঙ্কায় বাঁধ মেরামতির কাজে হাত লাগিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। বৃষ্টি কমলেও জলমগ্ন হাওড়ার ডুমুরজলা এলাকা। দুটি আবাসনের ভিতরে জল ঢুকেছে। একাধিক বাড়িও জলমগ্ন। দেখা গিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। গতকাল থেকে এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ফলে পাম্প চালিয়ে জল নামানো সম্ভব হচ্ছে না।