সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর: এক ফোনেই অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গেল দশ লক্ষ টাকা। 


শ্রীরামপুর চাতরার বাসিন্দা অসীম কুমার নন্দন বেসরকারী সংস্থায় কাজ করতেন। গত অগাস্ট মাসে স্বেচ্ছাবসর নেন তিনি। ভিআরএস-এর টাকা পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা রাখেন। 


শ্রীরামপুর পিএনবি শাখায় তার অ্যাকাউন্ট রয়েছে। চাকরির সুবাদে কলকাতার স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাঙ্কেও তার অ্যাকাউন্ট রয়েছে।


অসীম বাবু জানান, গত ২৮ জুলাই বিকাল চারটের সময় তাঁকে ফোন করে বলা হয়, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাঙ্কের মিনিমাম ব্যালেন্স কমে গেছে। হয় অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা রাখতে হবে। নয়তো অন্য ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে হবে।


তিনি পিএনবি ও ইউকো ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে দেন। এরপরে তার কাছে একটা ওটিপি আসে সেটা দিয়ে দিতেই টাকা উঠতে শুরু করে।


রাত দুটো পর্যন্ত দফায় দফায় দশ লক্ষ টাকা সরিয়ে নেয় জালিয়াতরা। তাঁর ইউকো ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকেও পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়।


যে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে বাকি দিনগুলো চালিয়ে দেবেন ভেবেছিলেন সেই টাকা এইভাবে চলে যাবে ভেবে উঠতে পারছেন না অসীম বাবু।


করোনা হওয়ায় ব্যাঙ্কে যেতে পারেননি অনেক দিন তাই টাকা সেভিংস অ্যাকাউন্টেই পরেছিল। তিনি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন না, নেট ব্যাঙ্কিং বা ডিজিটাল লেনদেনও করেন না তাও তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে টাকা তুলে নিয়েছে জালিয়াতরা। ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন তাঁর নেট ব্যাঙ্কিং চালু ছিল।


এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই ব্যক্তি। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ জানিয়েছেন অসীমবাবু। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ব্যাঙ্ক প্রতারণার নেপথ্যে জামতাড়া গ্যাংয়ের হাত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


এদিকে, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের শ্রীরামপুর শাখার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্যাঙ্কের কোনও গাফিলতি নেই। প্রতারকদের থেকে বাঁচতে সবসময় গ্রাহকদের সচেতন করা হয়। তবে এই ঘটনা কীভাবে হল তা খতিয়ে দেখা হবে।


এর আগে এই ধরনের অনেক প্রতারিতের টাকা উদ্ধার করে দিয়েছে সাইবার সেল। এখন সেই সেলের দিকেই তাকিয়ে বসে রয়েছেন অসীম বাবু ও তার পরিবার।