সমীরণ পাল, হাড়োয়া: হাড়োয়ায় গুলিকাণ্ডে গ্রেফতার হলেন মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। নদিয়ার নবদ্বীপ থেকে যজ্ঞেশ্বর প্রামাণিক ও তাঁর এক সঙ্গীকে জালে তোলে হাড়োয়া থানার পুলিশ। গুলিকাণ্ডে গ্রেফতারি ঘিরে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা।


২১শে জুলাই তৃণমূলনেত্রীর বার্তা শুনে বেরোনোর পরই উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার ট্যাংরামারিতে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান এক তৃণমূল কর্মী ও তৃণমূল সমর্থক এক বৃদ্ধা। 


তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি যজ্ঞেশ্বর প্রামাণিকের মদতেই গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অবশেষে ঘটনার ৯ দিন পর, জোড়া খুনে মূল অভিযুক্ত মোহনপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। 


তদন্তকারীদের দাবি, গুলিকাণ্ডের পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি। ব্যবহার করছিলেন না মোবাইল ফোনও। 


শেষমেষ গোপনসূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে প্রায় ১২০ কিমি দূরে নদিয়ার নবদ্বীপ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।


বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তারক ঘোষ বলেন, নিজেদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গণ্ডগোল ছিল। আমরা আগেই বলেছিলাম। ওদের নেতা শাজাহান মন্ত্রীকে ছাড়েনি। 


উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল কংগ্রেস কোঅর্ডিনেটর নারায়ণ গোস্বামী বলেন, আমরা গোড়া থেকে বলেছি রং দেখতে হবে না, অপরাধ করলে ছাড়া হবে না, আইন আইনের পথে চলবে।


গুলিকাণ্ডের পরদিনই, মূল অভিযুক্ত তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ঘনিষ্ঠ শাসকদলেরই বুথ সভাপতি-সহ ২১ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। 


ধৃত বুথ সভাপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র। এবার পুলিশের জালে ধরা পড়লেন খোদ শাসকদলের অঞ্চল সভাপতিই। 


অভিযোগ, শহিদ দিবসে তৃণমূল নেত্রীর ভার্চুয়াল ভাষণ শুনে ফেরার সময়  বুথ সভাপতি ভাস্কর দাসের বাড়ি থেকে তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে গুলি চলানো হয়।


এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, মাছের ভেড়ি থেকে অঞ্চল সভাপতি যজ্ঞেশ্বর প্রামাণিক বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকা তুলতেন। 


বছরভর হাড়ভাঙা খাটুনির পর তৃণমূল কর্মীদের সামান্য টাকা দেওয়া হত। এই নিয়ে প্রতিবাদ করায় দু’জন খুন হন বলে অভিযোগ।