কলকাতা: রাজারহাটকাণ্ডে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু। গ্রেফতার অধ্যাপক স্বামী। আত্মহত্যার তত্ত্ব উড়িয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে সরব বাপের বাড়ি। শরীরের প্রায় একশো শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল ওই গৃহবধূর। তাতেও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। কিন্তু শুক্রবার মাঝরাতে থেমে গেল তাঁর লড়াই, পুড়ে ছাই হয়ে গেল তানিয়া অগ্নি নামে মেয়েটির উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন।

কিন্তু কেন এই পরিণতি হল তাঁর? তানিয়ার বাপের বাড়ির দাবি, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ করার পরেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে বাধ সাধছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। স্ত্রীর উচ্চশিক্ষায় আপত্তি ছিল স্বামীরও, যিনি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক! তানিয়ার বাবার অভিযোগ, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অত্যাচার করত। বলত চাকরি ও পড়া যাবে না।

পরিজনদের দাবি, শ্বশুরবাড়ির বাধা সত্ত্বেও থামতে চাননি তানিয়া। দুই শিশু সন্তানকে সামলে আরও পড়তে চেয়েছিলেন। এর জেরেই বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর গায়ে আগুন দিয়ে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
তানিয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে দমদমের শ্রাবন্তী মিত্রের কথা। অভিযোগ ওঠে, আরও পড়তে চাওয়ায় তাঁকেও অত্যাচারের শিকার হতে হয়েছিল।

এ ধরনের ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও কোনও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, নারীর ক্ষমতায়নের প্রধান উপায় হচ্ছে শিক্ষা। আর তাতেই আপত্তি উঠছে।

এ ঘটনায় বধূ হত্যা, নির্যাতন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

মেয়েদের সংসার সামলেও আরও জ্ঞান লাভের বাসনা থাকা কি অন্যায়? নারী ক্ষমতায়নের জন্যই প্রয়োজন তাদের শিক্ষার প্রসারের।
রাজারহাটের ঘটনাটি সম্পর্কে আপনার প্রতিক্রিয়া জানান নীচের কমেন্টস বক্সে।