সুনীত হালদার, আমতা(হাওড়া):  রূপনারায়ণ ও মুন্ডেশ্বরীর জলের তোড়ে ভেঙে গেল ৩টি বাঁশের সেতু। যার জেরে হাওড়ার আমতার মূল ভূখণ্ড থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া চিতনান দ্বীপাঞ্চল। কংক্রিটের সেতু তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক।


একদিকে টানা বৃষ্টির জেরে ফুঁসছে নদী। অন্যদিকে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ছাড়া হয়েছে জল। এই দু’য়ের জেরে ভাসল হাওড়ার আমতার বিস্তীর্ণ এলাকা। 


দামোদরের বাঁধ উপচে রবিবার ভোররাত থেকে জল ঢুকতে শুরু করেছে হরিহরপাড়া, মুচিপাড়া সহ একাধিক গ্রামে।  জলের তলায় উদয়নারায়ণপুরের কুর্চি, হোঁদল, সিংটি এলাকার বিস্তীর্ণ কৃষিজমি।


উদয়নারায়ণপুরের কৃষক শশাঙ্ক হাজারি বলেন, সবজি থেকে তিল, বাদাম, মাছ চাষে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বাঁধ ঠিকমতো তৈরি করলে স্থায়ী সমাধান হবে। প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেল।


ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার ফলে রবিবার রূপনারায়ণ ও মুন্ডেশ্বরীর জলের তোড়ে ভেঙে যায় ৩টি বাঁশের সেতু।  এর ফলে আমতার মূল ভূখণ্ড থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ভাটোরা ও ঘোড়াবেড়িয়া চিতনান দ্বীপাঞ্চল। 


কুলিয়া ঘাট, উত্তর ভাটোরা এবং মীরগ্রামে তিনটি বাঁশের সেতু জলের তোড়ে ভেঙে যায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়ছেন এখানকার প্রায় ৫০ হাজারের বেশি বাসিন্দা। গাদাগাদি করে নৌকায় চলছে ঝুঁকির পারাপার। 


বুধবার রাত থেকে দফায় দফায় বর্ষণের জেরে রূপনারায়ন মুন্ডেশ্বরী নদীর জলস্তর বেড়ে গেছে। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামবাসীরা নৌকাতে জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যাচ্ছে কার্যত গাদাগাদি করে।


বাধ্য হয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই গাদাগাদি করে নৌকা ও ভুটভুটিতে চলছে যাতায়াত। নবদম্পতিকেও বাড়িতে আসতে হচ্ছে নৌকায় চেপে। এই অবস্থায় কংক্রিটের সেতু তৈরির দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। 


আমতার তৃণমূল বিধায়ক সুকান্ত পাল বলেন, কংক্রিটের সেতু নির্মাণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। দরপত্র নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। পুজোর আগে সেতুর কাজ শুরু হবে। 


প্রতি বর্ষাতেই দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়লে, দামোদরের নিম্ন অববাহিকা অঞ্চলে শুরু হয় জল-যন্ত্রণা। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, তার শেষ কবে? এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।


বিপদ এড়াতে চেষ্টা চলছে নদীতীরবর্তী বাসিন্দাদের উঁচু জায়গার সরিয়ে আনার। উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, বন্যা পরিস্থিতির জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছি। এখনই কোনও ভয়ের কোনও কারণ নেই। বিশ্বব্যাঙ্কের সাহায্যে মাস্টার প্ল্যান, তিনবছরে কাজ শেষ হবে।