সুনীত হালদার, উদয়নারায়ণপুর: ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার ফলে প্লাবিত হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতালের গেট থেকে শুরু করে এমার্জেন্সি, আউটডোর এবং ওয়ার্ডের বাইরে কার্যত জল থৈথৈ করছে। কোথাও হাঁটু সমান জল আবার কোথাও কোমর সমান জল। 


জল ঢুকেছে স্টাফেদের কোয়াটার, ডাক্তার ও নার্সের কোয়াটারেও। এতে হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সরা অসুবিধায় পড়েছেন। এর পাশাপাশি, চরম অসুবিধার শিকার হচ্ছে রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের। তাঁরা জানিয়েছেন, জল ভেঙে বাইরে থেকে ওষুধ ও খাবার আনতে বাধ্য হচ্ছেন। 


এদিকে হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, হাসপাতাল চত্বরে সাপের উপদ্রব রয়েছে। জল জমার ফলে সাপের উপদ্রব বাড়ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও কবে জল নামে তার দিকেই তাকিয়ে আছেন রোগী এবং তাঁদের পরিবারের লোকজন। 


বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতায়। জলের তলায় বিঘার পর বিঘা কৃষি জমি। রবিবার নতুন করে জল ছাড়ে ডিভিসি। আর তার জেরে উদয়নারায়ণপুরের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৮০টি গ্রাম জলের তলায়।


রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে বইছে জলের স্রোত। আর তার ফলে যাতায়াতে গ্রামবাসীদের ভরসা এখন নৌকা। ভেসে গিয়েছে আমতা থেকে উদয়নারায়ণপুরে যাওয়ার রাস্তা।


ড্রোন উড়িয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে পরিস্থিতি। প্রায় ১০ হাজার মানুষকে রাখা হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। কিন্তু, স্বস্তি নেই এখানেও। সেই শিবিরগুলিও জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধারকাজে নেমেছে এনডিআরএফ। 


শুধু হাওড়া নয়, ডিভিসি-র ছাড়া জলে প্লাবিত বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকে দামোদর তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম। ডুবে গিয়েছে রাস্তা। জলমগ্ন বাড়ি, কৃষি জমি। টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় জলসঙ্কট দেখা দিয়েছে। 


ডিভিসির ছাড়া জলে হুগলির ডাকাতিয়া খাল উপচে হরিপাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কৃষি জমি জলমগ্ন। 


বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত কৃষকদের। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন জেলার কৃষি আধিকারিকরা। এখনও পর্যন্ত ২৮ হাজার হেক্টর কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত বলে জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে।