ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: দ্বিতীয় ঢেউয়ের সমাপ্তির আগেই, তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। আর করোনা আবহে বিপদে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিন বন্ধু।
ধৃতিমান, অমিত, অর্চন। আর তাঁদের মুশকিল আসান হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ- ‘কোভিড লোকাল টাস্কফোর্স জেভ’। এর মাধ্যমেই, গত কয়েক মাস ধরে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন এরা। হাসপাতালে ভর্তি করা থেকে শুরু করে, চিকিৎসকের খোঁজ দেওয়া। অক্সিজেন সিলিন্ডারের জোগান থেকে শুরু করে ওষুধা। একবার কারও সমস্যা কানে এলেই হল। সঙ্গে সঙ্গে পাশে পাওয়া যাবে দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা এই তিন বন্ধুকে।
কোভিড টাস্কফোর্সের সদস্যরা ঘরেই বসেই আলোচনা না, হাসপাতালে সশীরের উপস্তিত হয়েও সেবা করেছে। সমাজকর্মী ধৃতিমান সেনগুপ্ত বলছেন, 'বিভিন্ন মানুষ যখন হাসপাতাল বেড খুঁজছে, আক্রান্ত বাড়ছে, সেই সব দেখে, তখন বাকি দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রুপ তৈরি করি। যেখানে যার যা সমস্যা আছে, তা আদান প্রদান করতে থাকে। মালদার একজন যোগাযোগ করেছিল। তাকে সুস্থ করে তুলেছি। পাশাপাশি একজনকে রেমডেসিভির জোগাড় করে দিয়েছি।
সম্প্রতি করোনায় নিজের বোনকে হারিয়েছে ধৃতিমান। তারপর থেকে যেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জেদটা বেড়ে গিয়েছে আরও কয়েকগুণ। একই ভাবে করোনা বাসা বেঁধেছিল অমিতকুমার সাহার বাড়িতেও। তা কাটিয়ে উঠতেও বেগ পেতে হয়েছে। কিন্তু তাই বলে, মানুষের সেবা থেকে কখনও এক চুলও সরে আসেননি তাঁরা। শুধু করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোই নয়। করোনা আবহে যে সমস্ত মানুষের খাবার জুটছে না, তাঁদের পাশেও আছেন তিন বন্ধু।
অর্চন ঘোষের কথায়, 'গরিব মানুষ অনেকেই লকডাউনে খাবার পাচ্ছিল না। কোথায় গেলে খাবার মিলবে সন্ধান করেছি। পাশাপাশি আলাদা ভাবেও ওদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছি।' সব মিলিয়ে এই আকালের দিনেও ত্রাতার ভূমিকায় ময়দানে নেমেছেন তিন বন্ধু। শহর থেকে জেলা। ধৃতিমান, অমিত, অর্চনের সাহায্যের হাত আজ ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যজুড়ে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।