কলকাতা: বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে ই-মেল করে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। আগামী দিনে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় কি তৃণমূলে যোগ দেবেন? তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিনেতা।


এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেছেন, , ‘কে দল ছাড়ল তাতে কিছু এসে যায় না। জয় বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ছিলেন না তখনও বিজেপি ছিল। ভবিষ্যতেও বিজেপি বিজেপির মতই থাকবে।’


কখনও দলের কর্মীদের গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।কখনও প্রশ্ন তুলেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কৌশল নিয়ে।কখনও প্রশ্ন, দলবদলকারী নেতাদের প্রসঙ্গে।সেই জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ই বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রীকে।


নয়ের দশকের একাধিক বাংলা ছবির হিরো।২০১৪-তে বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার আগে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।২০১৪ ও ২০১৯ - দু’টি লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করে হেরে যান।


বিভিন্ন সময়ে দল পরিচালনা নিয়ে নেতৃত্বকে নানা প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন জয়। শেষপর্যন্ত বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত। সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো ইমেলে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ২ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েও মেলেনি। অসুস্থতার সময়ে চিকিৎসা তহবিলের আবেদন জানালেও, সাড়া পাইনি। ২০১৭-তে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য করা হলেও, কিছুদিন পরে বাদ দেওয়া হয়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাও সরিয়ে নেওয়া হয়। 


জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ২০১৪ সালের ৬ মার্চ নরেন্দ্র মোদিকে দেখে আমি বিজেপিতে যোগদান করি রাহুল সিনহার হাত ধরে। আজ ২০২১ এর ৬ নভেম্বর, মোদিজিকে চিঠি দিয়ে বিজেপি থেকে সরে গেলাম। এই দল মানুষের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। আত্ম সমালোচনা করে না। তাই বিজেপি ছাড়ছি।


সেইসঙ্গে তৃণমূলে যোগদানের ইঙ্গিতও রয়েছে জয়ের বক্তব্যে। তিনি বলেছেন, এখন বাংলায় যে পার্টি মানুষের সঙ্গে আছে, মানুষ যে পার্টি সঙ্গে আছে,  সুযোগ পেলে সেই পার্টিতে জয়েন করব।


জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসন্তোষের সারবত্তা আছে বলে মেনে নিয়েছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হা। তিনি বলেছেন,জয় এবং অন্যান্য কর্মীদের পাশে আমরা দাঁড়াতে পারিনি, শুধু জয় নন, অনেকেরই এই নিয়ে হতাশা আছে।


এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, অনেক দিন ধরে উনি এমন বলছিলেন। ওখানকার যা পরিস্থিতি কোনও সুস্থ, ভদ্র লোক বিজেপিতে থাকতে পারেন না। 


বিধানসভা ভোটের পর, উপনির্বাচনেও জোর ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। একের পর এক নেতা, বিধায়ক, সাংসদ যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। সেই অস্বস্তির আরও বাড়ল, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ছাড়ার সিদ্ধান্তে। তবে জয়ের দল ছাড়াকে গুরুত্ব দিতে নারাজ দলের রাজ্য সভাপতি।