রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: মাঝে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধান। ফের একবার মৃত্যুফাঁদ জাতীয় সড়কে। বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে ফের বেপোরয়ো ডাম্পারের ধাক্কায় অকালে ঝরে গেল প্রাণ। জলপাইগুড়ির জলঢাকা জাতীয় সড়কের ঘটনা। গত জানিয়ারি মাসে যেখানে বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৪ জন। ফের সেই একই জায়গায় মোটরবাইকে ডাম্পার ধাক্কা মারায় প্রাণ গেল একজনের। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অন্য একজন।
বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে ঘটে দুর্ঘটনা। জলপাইগুড়ির জলঢাকা এলাকায় ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন মোটরবাইক আরোহী দুই ভাই। হাসপাতালে নিয়ে গেলে একজনের মৃত্যু হয়। অপরজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গতকাল রাতে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ধূপগুড়ি জলঢাকা সেতো সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় এর আগেও একাধিকবার ডাম্পারের ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা সত্ত্বেও পুলিশের জোরদার নজরদারি নেই। চলতি বছরের শুরুর দিকে দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শোকপ্রকাশ করেছিলেন। নিহতদের বাড়ি গিয়েছিলেন রাজনৈতিক নেতারা। ওই ঘটনার পরও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা।
জানা গিয়েছে, মোটর বাইকের সঙ্গে ডাম্পারের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন দুই যুবক তরুন রায়, অজয় রায়। গতকাল ময়নাতলি বাবু পাড়াতে আত্মীয়র বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তাঁরা। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় জলঢাকা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় মোটর বাইকে থাকা ওই দুই যুবকের পেছন থেকে ডাম্পার ধাক্কা মারে। গুরুতর আহত হন তাঁরা। আহত অবস্থায় ওই দুজনকে স্থানীয়রা সকালবেলা দেখতে পান। এর পরে দমকলকর্মীদের খবর দিলে দমকলকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে ধূপগুড়ি হাসপাতাল নিয়ে আসে, দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ধূপগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি স্থানান্তরিত করা হয়। জলপাইগুড়ি নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তরুণ রায়ের।
আহতদের দমকল উদ্ধার করে ধূপগুড়ি হাসপাতাল নিয়ে আসার পর ঘটনাস্থলে ময়নাগুড়ি থানা পুলিশ পৌঁছলে তাদেরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। তাঁদের অভিযোগ এর আগেও এই জলঢাকা সেতু সংলগ্ন এলাকায় বেপরোয়া পাথরবোঝাই ডাম্পারের সঙ্গে বিয়ে বাড়ির গাড়ির সংঘর্ষে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। আজ ফের বেপরোয়া ডাম্পার পেছন থেকে ধাক্কা মারায় একজনের মৃত্যু এবং একজন গুরুতর আহত হন। সরকারিভাবে বিধি-নিষেধ আরোপ করার পরেও, সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বেপরোয়াভাবে বালি, পাথর বোঝাই করে ডাম্পার রাস্তায় ছুটলেও তা নিয়ন্ত্রণ করছে না পুলিশ বা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এই অভিযোগে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তারা।