অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও মোহন প্রসাদ, শিলিগুড়ি: দার্জিলিঙে সেবক রংপো রেল টানেলের কাজ চলার সময় বালুখোলাতে দুর্ঘটনা। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টির জেরে ধস নেমেই যে বিপত্তি। নির্মাণকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৫ শ্রমিক। যার মধ্যে ২ জনের চোট গুরুতর। সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার সময় কাজ করছিলেন মোট ৭ জন শ্রমিক। যে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। দুর্ঘটনার পর আপাতত টানেলের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কীভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটল, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দক্ষিণবঙ্গের মতো না হলেও উত্তরবঙ্গেও ভালোরকমই বৃষ্টি চলছে। তার মাঝেই বালুখোলার কাছে সেবক রংপো রেল টানেল প্রকল্পের কাজ চলছিল। দীর্ঘদিন ধরেই টানেলের কাজ চলছে। গতকালের অতিবৃষ্টির জেরে মাটি আলগা হয়ে গিয়ে টানেলের মধ্যে ধস নামে বলেই মনে করা হচ্ছে। ধসের জেরে কাদা-পাথর মিশ্রণ হঠাৎ করে টানেলে ঢুকে পড়ে আটকে পড়েন সেখানে কর্মরত শ্রমিকরা। রাতে সেই সময় ৭ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। ঘটনার খবর পেয়েই স্থানীয় পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, বুমার (বড় ড্রিলিং মেশিন) নিয়ে টানেলের উপরের অংশে কাজ করার সময়ই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ধসের জেরে টানেলে ঢোকার সমস্ত পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েক ঘণ্টার উদ্ধারকার্যের পর ৭ জন শ্রমিককেই বের করে আনা সম্ভব হয়। তাদের সকলকে নিয়ে ছোটা হয় কালিম্পং জেলা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে নিয়ে গেলে জানানো হয় দু'জন শ্রমিক ততক্ষণে মারা গিয়েছেন। ২ জন শ্রমিকের আঘাত বেশ গুরুতর। তাদের চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরিত করা হয়েছে শিলিগুড়ির নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজে। বাকি ৩ জন শ্রমিকের আঘাত ততটা গুরুতর নয়। তাদেরকে কালিম্পং জেলা হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা চালানো হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সালকু মুর্মু ও নরেশ সোরেন, এই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। দু'জনেই ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তি শ্রমিকদের নাম যথাক্রমে সুফল হেমব্রম, সুকেশ্বর সিংহ, ঠাকুর দাস, অশোক সিংহ ও কুন্দন সিংহ। সুফল, সুকেশ্বর, ঠাকুর ও অশোক এই চার শ্রমিকও ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। কুন্দন বিহারের বাসিন্দা। সুফল হেমব্রম ও ঠাকুর দাসের চোট গুরুতর হওয়ায় তাদের নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।