সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: চলচ্চিত্র জগতে ফের শোকের ছায়া। প্রয়াত চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। কলকাতা ছাড়িয়ে শোকের আঁচ পড়েছে পুরুলিয়াতেও। চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত প্রয়াণে শোকস্তব্ধ পুরুলিয়া আনারা রেল কলোনি।


বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের বাবা ডা. তারাশঙ্কর দাশগুপ্ত রেলের মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানেই ১৯৪৪ সালে জন্ম চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব বাবুর। আনারা ওল্ড কলোনি রেলওয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন রেল কোয়াটারে তাঁর জন্ম। বেড়া ওঠা আনারাতেই। যদিও এখন সেই কোয়াটার ভগ্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ছোট বেলায় পড়াশোনা করতেন  শিব নারায়ন হাই স্কুলে।  তারপর ১২ বছর বয়সে আনারা থেকে চলে আসেন কলকাতায়।


তবে কলকাতায় চলে এলেও নিজের শিকড়কে ভোলেননি চিত্র পরিচালক। ২০১৭ সালেও তিনি দেখতে যান নিজের জন্ম ভিটে। সেখানে একটি টেলিফিল্মের শ্যুটিং করেন। তাছড়া তিনি পুরুলিয়াতে অনেক  ছবির শ্যুটিং করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে উত্তরা, মন্দ মেয়ের উপাখ্যান, একটি টিভি সিরিয়াল সহ ওহ্ বলে একটি হিন্দি ছবির শুটিং করেন।


১৯৬৮ সালে তথ্যচিত্র তৈরি করে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর।  ১৯৭৮-এ প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি দূরত্ব পরিচালনা করে জাতীয় পুরস্কারের শিরোপা পেয়েছিলেন তিনি। এরপর নিম অন্নপূর্ণা, গৃহযুদ্ধ, বাঘ বাহাদুর, তাহাদের কথা, চরাচর, মন্দ মেয়ের উপাখ্যান-সহ একের পর এক উল্লেখযোগ্য ছবি। পুরস্কারের ঝুলিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি জাতীয় পুরস্কার। এছাড়াও চলচ্চিত্র পরিচালনায় বিদেশি পুরস্কারও পেয়েছেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। 


এদিন দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে মৃত্যু হল তাঁর। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। বয়সজনিত কারণে সমস্যা ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ডায়ালিসিস চলছিল তাঁর। আজ সকাল ছয়টা নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রে এক সোনালী অধ্যায়ের অবসান হল। পরিবার সূত্রে খবর, গতকালও তাঁর ডায়ালিসিস হয়েছিল। আজ ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় এই বিশিষ্ট পরিচালকের। এদিন সকালে দেখা যায়, তাঁর সাড়া মিলছে না। এরপর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭। পরিবার সূত্রে খবর, আজই প্রয়াত পরিচালকের শেষকৃত্যু সম্পন্ন হবে।