রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: শিবরাত্রি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উপচে পড়া ভিড় উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ শিবতীর্থ জল্পেশ মন্দিরে৷ 


প্রতিবছর শিবরাত্রি উপলক্ষে জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে অবস্থিত শিবলিঙ্গে জল ঢালতে আসেন অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী৷ এবছরও তার অন্যথা হয়নি৷ এদিন সকাল থেকে ময়নাগুড়ি ছাড়াও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ভক্তরা আসতে শুরু করেন জল্পেশে। 


শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়ে। এদিন মন্দিরে আগতদের মধ্যে মহিলাদের সংক্ষা ছিল সব থেকে বেশি। 


কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জল্পেশ মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যাবস্থা। শিবরাত্রি উপলক্ষে জল্পেশ মন্দির সাজিয়ে তোলা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যাবস্থাও যথেষ্ট জোরদার রয়েছে জল্পেশ মন্দির এলাকায়।



জল্পেশ মন্দির হল অত্যন্ত প্রাচীন ও বিখ্যাত শিব মন্দির। এটি জলপাইগুড়ি জেলার মনাগুড়ির কাছে জল্পেশে অবস্থিত। শ্রাবণ মাসে এই মন্দিরে প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। সেই সময় মন্দির চত্বরে শ্রাবণী মেলা বসে। তাতে প্রচুর মানুষ অংশ নেন।


জল্পেশ মন্দিরকে অত্যন্ত পবিত্র স্থল হিসেবে বিশ্বাস করেন ভক্তরা। কথিত আছে, ১৫২৪ সালে কোচবিহারের রাজা মহারাজ নারায়ণের বাবা শ্রী বিসু সিংহ এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 


আবার অন্য মতে, ৮০০ খ্রীস্টাব্দে এই মন্দিরটি তৈরি করেন বাঘদত্তার উত্তরসূরী জল্পেশ। সেই থেকে এই মন্দির অনেক সংস্কার ও পরিবর্তন হয়েছে। 


কথিত আছে, বখতিয়ার খিলজি যখন কামরুপ আক্রমণ করেছিলেন, এই মন্দিরটিও সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। পরে, দ্বাদশ খ্রীস্টাব্দে ভূটানের রাজা এই মন্দির পুনরায় গড়ে তোলেন। 


পরে, এই মন্দিরটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিল। সবশেষেস, কোচবিহার রাজবংশের আমলে ১৬৬৫ সাল নাগাদ তাতে সংস্কার করে চালু করা হয়। 


জেলা তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত এমনকী, ভিন্ রাজ্য থেকেও মানুষ আসেন এই মন্দির দর্শন করতে।