অভিজিৎ চৌধুরি, মালদা : তৃণমূল নেতা বুলবুল খানের তৎপরতায় মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার দুদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে এল। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর থানা এলাকার দৌলতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চিতোলিয়া গ্রামে। দুর্দিনে শাসকদলকে এভাবে পাশে পেয়ে আপ্লুত পরিবার।
জানা যাচ্ছে, কিছুদিন আগে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয় এলাকার ১৬ বছরের কিশোর দেবা দাস। দুর্ঘটনায় তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। এরপর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে সে। মাথার চোট-আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে ওই কিশোর এখনও পর্যন্ত কথা বলতে পারে না। এমনকি হাঁটা-চলা করতে গেলেও অন্যদের সাহায্য নিতে হয় তাকে। দুর্ঘটনার পরই চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কিশোরকে। এরপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ফের তাকে শিলিগুড়ি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা কিশোরের পরিবারকে জানিয়ে দেন যে, এখনই যদি কিশোরের মাথার অপারেশন না করা হয়, তাহলে তার অবস্থার আরও অবনতি হবে।
চিকিৎসকদের এমন কথায় আরও সমস্যায় পড়েন কিশোর দেবা দাসের বৃদ্ধ বাবা-মা। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, দিন আনি দিন খাওয়া দরিদ্র পরিবারের সন্তান দেবা। কোনওরকমে সংসার চলে তাদের। ছেলের চিকিৎসার জন্য এত টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবেন, তা নিয়েই গভীর সঙ্কটে পড়ে দরিদ্র অসহায় বাবা-মা। এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কিশোরের পরিবার এখনও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও পায়নি। ছেলেটির মাথার অপারেশন করাতে খরচ হবে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। আত্মীয়-স্বজন থেকে পাড়া প্রতিবেশীদের থেকে সাহায্য চেয়ে কিছু টাকার ব্যবস্থা হলেও চিকিৎসার জন্য এখনও অনেক টাকা প্রয়োজন। কীভাবে এত টাকার ব্য়বস্থা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তাঁরা। আর কোনও উপায় না দেখে বাধ্য হয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর দেখানোর পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। পরিবারের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন মালদা জেলার তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান। মুখ্যমন্ত্রীকে ছেলের চিকিৎসার কথা জানিয়ে চিঠি লেখার পরই কিশোরের বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। এছাড়াও সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়ে ছেলেকে সুস্থ করে তোলার আশায় মুখ্যমন্ত্রী এবং সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বৃদ্ধ অসহায় দম্পতি।