করুণাময় সিংহ, মালদা:মালদার রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ঘিরে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বিস্ফোরক বিডিওর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য। ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক এর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃনমূল সদস্য সাধন চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, "বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে রতুয়ায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। আস্থা-অনাস্থা ঘিরে জর্জরিত পঞ্চায়েত সমিতির সমস্ত কাজকর্ম। মানুষ আমাকে নির্বাচিত করেছিলেন উন্নয়নের জন্য। উন্নয়ন করতে পারিনি। বিগত তিন বছর ধরে উন্নয়নের কাজ বন্ধ। শুধু রাবার স্ট্যাম্প হয়ে বসে আছি। মানুষের কোনও কাজ করতে পারেনি। তাই সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।"
গোষ্ঠী কোন্দলের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। একইসঙ্গে দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে দাবি করেছেন জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর হেমন্ত শর্মা। তাঁর এই দাবিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ঘিরে কার্যত অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পঞ্চায়েত সমিতির ৩০ টি আসনের মধ্যে ২৬ টি আসনে জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, চারটি আসন পেয়েছিল কংগ্রেস । ৪ কংগ্রেস সদস্য পরে তৃণমূলে নাম লেখানোয় বিরোধীশূন্য হয় রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি।
বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। প্রায় প্রত্যেকদিন তৃণমূলের নানান স্তরের নেতা ও কর্মীদের বিজেপিতে যোগদানের পালা চলছিল। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রতুয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ১৮ জন সদস্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে যান। ফলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে বোর্ড।
বিধানসভা ভোটের ফল বেরোনার পর ফের উল্টো স্রোত। ফল ঘোষণার পর ওই ১৮ জন সদস্যই তৃণমূলের ফিরতে চেয়ে আবেদন জানান। কিন্তু তৃণমূল সূত্রের খবর দলত্যাগীদের দলে ফেরানোর প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। ব্লক সভাপতি ফজলুর রহমান ও জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা রতুয়ার তৃণমূল নেতা হেসামুদ্দিন এর বিবাদের কারণে দলত্যাগীদের ফেরানো সম্ভব হয়নি বলে খবর। ফলে স্তব্ধ হয়ে রয়েছে এলাকার উন্নয়ন। আর এই কারনেই সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সাধন চক্রবর্তী। আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর হেমন্ত শর্মা।