কলকাতা: হাসপাতালগুলিকে কসাইখানায় পরিণত করবেন না। সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করুন। নিঃস্বার্থ পরিষেবার কোনও বিকল্প নেই। জীবন দিতে হবে, নিতে নয়। অ্যাপোলো হাসপাতালে সঞ্জয় রায়কে ভর্তি, পরে তাঁকে ছাড়তে গড়িমসি এবং পরে এসএসকেএমে তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় এভাবেই বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


উল্লেখ্য, এর আগে কিছুদিন আগে টাউনহলে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিহোমগুলির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রকাশ্যে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি সাফ বলেছিলেন, ইঁট-কাঠের ব্যবসার সঙ্গে চিকিত্সার তফাত রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিহোমগুলির বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের কথা উল্লেখ করে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি।

সেই হুঁশিয়ারিতে কাজ না হলে এরপর কী, তা এদিন বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন,আজ চার ঘণ্টা ধরে বিল তৈরি করেছি। বিলে কড়া শাস্তির সংস্থান থাকছে।

অনেকে বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সোমবারের চাঁচাছোলা বক্তৃতায় একটা বক্তব্য স্পষ্ট। এরপরও মানুষের ক্ষোভকে হালকাভাবে নিলে আখেরে ক্ষতি হবে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিরই।

মমতা বলেছেন, মানুষের মধ্যে এত ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে কেন। নিশ্চয় ভুলভ্রান্তি আছে। মূল্যায়ন করে পথ চলতে হবে। যা হওয়ার হয়েছে। এবার নতুন করে শুরু করুন।

বুধবার টাউন হলের বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন, বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে, তা তাঁর জানা।

কিন্তু, সেদিনের কড়া হুঁশিয়ারির পরও বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অভিযোগে ভাঁটা পড়েনি। উল্টে খাস কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে বিল বকেয়া থাকায় মরণাপন্ন রোগীকে এসএসকেএমে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। শেষমেশ ফিক্সড ডিপোজিটের নথি জমা রেখে তাঁকে ছাড়াতে হয় পরিবারকে। এরকম অমানবিক আচরণ যে ভবিষ্যতে তিনি বরদাস্ত করবেন না, তাও এদিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, লাভের তো একটা সীমা থাকে। তা সীমাহীন যেন না হয়। কারও ফিক্সড ডিপোজিটের নথিও নেওয়া হচ্ছে। মৃতদেহও আটকে দিচ্ছে। এমন কিছু যেন না হয়।

অনেকে বলছেন, সাধারণ মানুষের কাছে এখন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম...আতঙ্কের অপর নাম। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পর আরোগ্য প্রতিষ্ঠানের এই ভাবমূর্তিটা বদলাবে কি?