কলকাতা: নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টে যে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করেছিলেন তার শুনানি পিছোল। আগামী বৃহস্পতিবার ওই শুনানি হওয়ার কথা। 


আদালত সূত্রে খবর, আজ বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, শুনানির সময় মামলাকারীদের উপস্থিত থাকতে হয়। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা জানান,  আইনে যা বলা আছে তাঁরা সেই অনুযায়ী চলবেন। 


নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে। এই অভিযোগ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়ের করেছেন ইলেকশন পিটিশন। গণনায় কারচুপির পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগে করেছেন তিনি। 


এর আগেই অবশ্য তৃণমূলের তরফে গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল। নন্দীগ্রামে পুনর্গণনার দাবিতে নির্বাচন কমিশনকেও চিঠি দিয়েছিল তৃণমূল। 


চিঠিতে দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, ভোটগণনা চলাকালীন তা থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমনকী নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তা জানানো হয়নি।  এই ফাঁকেই ইভিএমে কারচুপি করা হয়েছে। ভুয়ো ও বাতিল ভোটও বিজেপির হয়ে গোনা হয়েছে। ব্যালট বাক্স এবং ভোটগণনায় কারচুপি রয়েছে। পোস্টাল ব্যালটও ভুলভাবে গোনা হয়েছিল।


মমতার পিটিশন দাখিল প্রসঙ্গে টুইটার হ্যান্ডলে তৃণমূলনেত্রীকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য লিখেছেন, আপনি কীভাবে দু’বার একটি নির্বাচনে হারবেন? প্রথমত, জনতার রায়ে আপনি হেরেছেন। তারপর সেই হার মেনে নিতে না পেরে জনতার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামে পরাজয়ের অপমান দ্বিতীয়বার সহ্য করতে দেখাটা খুব মজার হবে।


বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে পরাজয়ের পর অন্য জায়গায় দাঁড়াবেন বলে ঠিক করে নিয়েছেন। কারণ, উনি জানেন, যা হয়েছে তা ঠিকই হয়েছে।


একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এপিসেন্টার হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম কেন্দ্র। তার অন্যতম কারণ, একদা ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


আর ফল ঘোষণার দিনও নন্দীগ্রাম নিয়ে উত্তেজনা কম ছিল না। ২ মে-র সন্ধে পেরিয়ে গিয়েছে তখন। একের পর এক কেন্দ্রের ফলাফল সামনে আসতে শুরু করেছে।  কিন্তু, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেছেন না হেরেছেন, তা নিয়ে তখনও ধোঁয়াশা ছিল অব্যাহত।


এমন সময়ে সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়ে দেয়, শুভেন্দু অধিকারীকে হারিয়ে নন্দীগ্রামে জিতেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ১২০০ ভোটের ব্যবধানে। কিন্তু, তার প্রায় ঘণ্টাখানেক পর, হেরে গিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী, ১৭৩৬ ভোটের ব্যবধানে।