কলকাতা: রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে করোনা ভ্যাকসিন দিতে চায় সরকার। বিভিন্ন জেলার পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্তাদের লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে লিখেছেন, আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের সরকার রাজ্যের সমস্ত মানুষের কাছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। আগে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
চিঠিতে প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি শেষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই চিঠি পৌঁছেছে বিভিন্ন জেলার পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগেই ঘোষণা করেছেন, দেশের ১৩৫ কোটি মানুষকেই বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। তাহলে বাঁচলটা কে! মুখ্যমন্ত্রী এটাও চুরি করছেন। এর আগে, চাল থেকে শুরু করে বাড়ি চুরি করেছেন। এখন টিকা চুরি করছেন। মুখ্যমন্ত্রী কি টিকা আবিষ্কার করেছেন?"
৩ কোটি প্রথমসারির যোদ্ধাদের বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।আর এর কৃতিত্ব নিতে দৌড়চ্ছেন পিসি, ট্যুইট অমিত মালব্যর। বাংলায় বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক ট্যুইটে লেখেন, "করোনা মোকাবিলায় বিপর্যয় ডেকে আনেন পিসি।চিকিৎসক থেকে পুলিশ - সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর এই অনীহার প্রতিবাদ করুন।"
এবার বিনামূল্য করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষণা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা বাবুল সুপ্রিয়র। ট্যুইটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লেখেন, "কেন্দ্রীয় সরকার আগেই দেশের মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। আর এখানে দেখুন দিদি তা নিয়ে রাজনীতি শুরু করে দিয়েছেন। অসত্য কথা না বলে ওনার উচিত চাল-চুরির মতো টিকা-চুরি যাতে না হয় তা দেখা।" ট্যুইটারে আক্রমণ বাবুল সুপ্রিয়র।
মমতার ভ্যাকসিন-চিঠিকে 'নির্বাচনী ঘুষ' হিসেবে ঘোষণা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, "আমি তো বলেছি, দেশের সবাইকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। এখন সামনে ভোট। মুখ্যমন্ত্রী সকলকে 'ভোটের উপহার' দিচ্ছেন। যদিও আমি এটাকে 'নির্বাচনী ঘুষ' বলব।"
যদিও বিজেপির অভিযোগকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, "ভ্যাকসিনের কৃতিত্ব কে নিচ্ছে, তা অমূলক। রাজ্য সরকার যদি নেয়-ও, তারাও কেন্দ্রের মতো নির্বাচিত সরকার। কাজ করে কৃতিত্ব নেয়। ভাষণ দিয়ে তো কিছু হাসিল হয় না।"
আগামী ১৬ জানুয়ারি, শনিবার দেশে শুরু হবে করোনার টিকাকরণ। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে নেওয়া হয় সিদ্ধান্ত। এর আগে, বছরের শুরুতেই কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিন-এ জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমোদন দেয় ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া।