কলকাতা: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে ভোগান্তির নালিশ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সব নার্সিংহোম ও বেসরকারি হাসপাতালকে এই পরিষেবা দিতে হবে। নবান্নে ভার্চুয়াল বৈঠকে এমনই বার্তা দিল রাজ্য সরকার।


এদিন বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিব সহ অন্যান্য দফতরের আধিকারিকরা। সেখানে প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় স্বাস্থ্য সাথী কার্ড যেন সকলেই পায়।


এদিকে আজ মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইট করে জানান, দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এখনও পর্যন্ত ৯০ লক্ষ রাজ্যবাসী বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন।


প্রসঙ্গত, একুশের মহাযুদ্ধ জিততে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বড় হাতিয়ার 'সবার জন্য স্বাস্থ্যসাথী'। সমস্ত রাজ্যবাসীর জন্য পাঁচ লক্ষ টাকার ক্যাশলেস স্বাস্থ্যবিমা।


ভোটের বছরের গোড়ায় গত সপ্তাহে নিজের পাড়া থেকে তার ব্র্যান্ডিং করেন মুখ্যমন্ত্রী। লাইনে দাঁড়িয়ে 'স্বাস্থ্যসাথী' কার্ড নিলেন মুখ্যমন্ত্রী।


কলকাতা পুরসভার তিয়াত্তর নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ওয়ার্ডেরই হরিশ মুখার্জি রোডের জয়হিন্দ ভবনে আয়োজিত হয় দুয়ারে সরকার শিবির।


কলকাতা পুরসভার অডিটোরিয়ামে বেলা এগারোটা নাগাদ প্রতিবেশীদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী। তিনজন প্রতিবেশীর পিছনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করেন তিনি।


যদিও, গোটা বিষয়টাকেই নাটক বলে কটাক্ষ করে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ড্রামা করেন। উনি কি এলিজিবল? নোটবন্দির সময় রাহুল গাঁধীও টাকা তুলেছিলেন। পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকার ঘাপলা করে দশ হাজার টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। মানুষ কি বোঝে না এসব ড্রামা।


যদিও, বিজেপিকে পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, দিলীপবাবু একজন রাজনৈতিক নেতা। এটা ভেবে লজ্জা হয়। দিলীপ ঘোষ জানেন না নাটক কী। জন্মসূত্রেই দিলীপবাবুই আসলে নাটুকে এই জন্য আমাদের দুঃখ হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের অনেক কাছাকাছি। মানুষের প্রতি তাঁর গভীর ভালবাসা রয়েছে, আজ সেটা প্রমাণিত হল। মমতা যা করলেন অন্যদের অনুকরণযোগ্য।


পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, নিজেকে সব সময় সিএম বলেন না। সব সময় বলেন কমন ম্যান অর্থাত্ সাধারণ নাগরিক। সহ নাগরিকদের সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের গর্ব, সাধারণ ভাবে তৃণমূলস্তরে ঘোরাফেরা করেন। তৃণমূলস্তরে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন।


রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ভোটের মুখে লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কৌশলী বার্তা দেন তৃণমূল নেত্রী। তা হল -- এক, তিনি আম আদমির মুখ্যমন্ত্রী। ২. ক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে থেকেও সাধারণের মতো জীবনাপন করেন।


শেষ অবধি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তাতে কাজ হয় কি না, তার উত্তর ভোটের ফলেই মিলবে।