কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব ফের দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ভুয়ো ক্যাম্প করার পর সঙ্গে সঙ্গে ধরে নিয়েছি। এ ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনও করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনায় তৃণমূল বা সরকারের কোনও ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ভুয়ো ক্যাম্প নিয়ে অনেকে বড়বড় কথা বলছেন, ফেক নিউজের ব্যাপারে তাঁদের অবস্থান কী!
উল্লেখ্য, ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে তৎপরতা দেখিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে, ভুয়ো ভ্যাকসিন নিয়ে অভিযোগে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র। ব্যাখ্যা চেয়ে ২ দিনের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় এদিন বলেছেন, একটা ছোট্ট ঘটনা ঘটলেও, বাংলাকে বদনামের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেছেন, ভুয়ো ক্যাম্প একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, সরকারের সঙ্গে কোনও যোগ নেই।
উত্তরপ্রদেশে গঙ্গার জলে দেহ ভেসে আসার ঘটনা নিয়ে এদিনও বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন তিনি। বলেছেন, গঙ্গা দিয়ে এখনও অনেক মৃতদেহ ভেসে আসছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন, গুজরাতে পার্টি অফিস থেকে ভ্যাকসিন বিলি হয়েছে। ঘটনা বিজেপি যে সাজিয়ে করেনি, তার প্রমাণ কোথায়?
তিনি বলেছেন, এই সমাজে কিছু দুষ্টু লোক আছে, সরকারের লোগো ব্যবহার করে। সরকারের অনলাইন পরিষেবার মাধ্যমে আবেদন করবেন। ভ্যাকসিন নিয়ে যা হল, তা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। চোর-ডাকাতরা সবসময় ছবি তুলে রাখার চেষ্টা করে। অনেকে সেলফি তোলার চেষ্টা করে, বারণ করে দিই।
তিনি আরও বলেছেন, বিজেপির অনেক ছবি আছে, আগামী দিনে বেরোবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ওই ভুয়ো ক্যাম্পে ভ্যাকসিনের নামে অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। এতে কারও কোনও ক্ষতি হবে না। তবে যাঁরা ওই ভুয়ো ক্যাম্পে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁদের স্বাস্থ্যের ওপর সরকার নজর রাখছে।
এদিনও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ভুয়ো ক্যাম্পে যা করা হয়েছে, তা মারাত্মক ভুল, সন্ত্রাসবাদের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
উল্লেখ্য, ভুয়ো আইএএস পরিচয় দিয়ে করোনা টিকাকরণের ভুয়ো শিবির করে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে দেবাঞ্জন দেব। এই ঘটনার পর থেকে তার নানান ধরনের জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। খোদ কলকাতার বুকে কসবায় ভুয়ো করোনা ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প করেছিল সে। রীতিমতো সাজিয়ে-গুছিয়ে। পুরোদস্তুর কলকাতা পুরসভার ক্যাম্পের ধাঁচে। ১০ থেকে ১২দিন ধরে চলে ভুয়ো ক্যাম্প। বিশ্বাসে ভর করে প্রতিদিন গড়ে দেড়শো জন। অর্থাৎ প্রায় প্রায় হাজার দেড়েক মানুষ। লাইনে দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিনও নিয়ে নেন। শুধু তাই কসবাতেই নয়, উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট সিটি কলেজেও ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পের আয়োজন করেছিল দেবাঞ্জন।