কলকাতা: পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ নিয়ে কংগ্রেসের ঘরেই এখন চরম টানাপোড়েন। প্রশ্ন একটাই, কী করবেন মানস ভুঁইয়া? কী করবে কংগ্রেস? চলছে এসএমএস চালাচালি। বাড়ছে জল্পনা।
সোমবার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বলে সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়াকে তিনটি এসএমএস পাঠান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, প্রথম এসএমএসে তিনি লেখেন, 'মানসদা। আপনি দলের দৃষ্টিভঙ্গি খুব ভাল করেই বুঝতে পারছেন। রাজ্যের বর্তমান যা রাজনৈতিক সমীকরণ, তার প্রেক্ষিতে আপনার নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা লঘু হতে দেওয়া উচিত নয়। অন্তত একবছরের জন্য আপনি আত্মত্যাগ করতে পারেন। দলের সর্বোচ্চ স্তর থেকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল'।
সূত্রের খবর, অধীরের এই এসএমএসের কোনও উত্তর দেননি মানস । অধীর ফের একটি এসএমএস-এ লেখেন, 'মানসদা শাসক দলের দ্বারা প্রভাবিত হবেন না। আপনার যন্ত্রণা বুঝতে পারছি। কিন্তু, তারপরও ছোট ভাই হিসেবে বলছি, দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান করুন। নিজের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত হতে দেবেন না'।
কিন্তু, তারপরও মানসের উত্তর আসেনি। এরপর অধীর কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের উপনেতা নেপাল মাহাতোকে বিষয়টি বলেন। তিনি আবার মানসকে ফোন করে অধীরের এসএমএসের কথা জানান। তারপরই অধীরকে পাল্টা দীর্ঘ এসএমএস পাঠান মানস ।
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, সেখানে তিনি আব্দুল মান্নানের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে লিখেছেন, 'আব্দুল মান্নান কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছাড়াই সুজন চক্রবর্তীকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করতে চাইছেন, জেনেই আমি তোমাকে তিনটি মেসেজ পাঠাই। প্রধান বিরোধী দল হিসেবে এটা কংগ্রেসের প্রাপ্য। এব্যাপারে বিধায়কদের মতামত নেওয়ার জন্য আব্দুল মান্নান পরিষদীয় দলের কোনও বৈঠকও ডাকেননি'।
সোমবারের ঘটনাক্রমের উল্লেখ করে মানস তাঁর এসএমএসে লিখেছেন, 'আমি নেপাল মাহাতো এবং মনোজ চক্রবর্তীকে অনুরোধ করি, পিএসি-র তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দিতে। কারণ, তুমি এবং আব্দুল মান্নান সিদ্ধান্ত নিয়েছিলে যে, সুজন চক্রবর্তী পিএসি-র চেয়ারম্যান হবেন। এরপর স্পিকার আমার নাম ঘোষণা করেন। ২৫৫ এ ধারা উল্লেখ করে তিনি এর ব্যাখ্যাও দেন। এরপর আমি আব্দুল মান্নানকে ঘরে ডেকেছিলাম এটা জানতে যে, আমার কী করা উচিত। কিন্তু, মান্নান গুরুত্ব দেননি। বদলে তিনি সুজন চক্রবর্তীকে নিয়ে ওয়াকআউট করেন। এবার তুমি বল, এতে আমার কী ভুল'?
তবে মান্নানের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও, মানস নিজে পদ ছাড়ার ব্যাপারে সরাসরি কিছুই বলেননি। প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, তিনি অধীরকে পাঠানো এসএমএসে শুধু লেখেন, 'তুমি আব্দুল মান্নানকে নির্দেশ দাও পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে। অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে বলছি, অপূর্ব সরকার, যাঁকে আমি খুব শ্রদ্ধা করি, তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন যে, আমাকে আমার চেয়ারে বসতে দেবেন না। আমাকে বয়কট করবেন। আব্দুল মান্নান এবং আরও কয়েকজন মিলে এই পরিস্থিতি তৈরি করছেন'।
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে খবর, মানসের দীর্ঘ এসএমএসের জবাবে অধীর আবার তাঁকে একটি এসএমএস করে বলেন,
'আমি নিশ্চয় পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকতে বলব। তবে শাসক দলের অসাধু উদ্দেশ্য বোঝার মতো বুদ্ধি আপনার আছে। তাদের ফাঁদে পা দেবেন না। এটা আপনার কাছে আমার একান্ত অনুরোধ। আপনাকে কেউ অপদস্ত করলে আমি বরদাস্ত করব না'।
অধীর জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহেই তিনি পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকার নির্দেশ দেবেন। সূত্রের খবর, মানস ভুঁইয়াকে নিয়ে এই বিতর্কের খবর পৌঁছেছে ১০ জনপথ পর্যন্ত। হাইকম্যান্ড বর্ষীয়ান সাংসদদের থেকে এবিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধী, সি পি জোশী। শেষমেশ বিষয়টি তাঁরা প্রদেশ নেতৃত্বের হাতেই ছেড়েছেন বলে সূত্রের খবর।
অধীরের এসএমএস, জবাব দিলেও ধোঁয়াশাই রাখলেন মানস, কংগ্রেসে সংকট চরমে
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
05 Jul 2016 02:53 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -