কলকাতা: রাজ্যে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে ২৪। কলকাতায় আরও একজনের শরীরে সংক্রমণ, ভর্তি এসএসকেএমে। রাজ্যে মোট আক্রান্তর মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু। আরও ৪ জনের শরীরে সংক্রমণ-সন্দেহ। মোট ৩৩ জন মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। 


এই প্রেক্ষাপটে রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসা হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। একে করোনায় রক্ষে নেই, তার উপর দোসর ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। দেশে এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে মারণ ভাইরাস করোনা।


এর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসে প্রাণহানির ঘটনা। যার থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাংলাও। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন,এ রাজ্যে এখনও অবধি মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত ২৪ জন। গত ২২ মে এঁদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।


চিকিৎসকরা বলছেন, মূলত করোনা রোগী বা করোনা থেকে সেরে ওঠার পরই শরীরে বাসা বাঁধছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। কারণ ওই সময় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমে যায়। আর এরপরেই বিপত্তি। মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয়ে আগে থেকেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’জনের চিকিৎসা চলছি। 


উপসর্গ নিয়ে আরও দু’জন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন পুরুলিয়ার বাসিন্দা বাবলু মণ্ডল। এবং অন্যজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা তবাসুম খাতুন। এদের মধ্যে বাবলু মণ্ডল করোনা আক্রান্ত। উপসর্গ দেখে স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটি নিশ্চিত, দু’জনই মিউকরমাইকোসিসে সংক্রমিত।অন্যদিকে শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে যে মহিলা ভর্তি রয়েছেন, সোমবার তাঁর চোখ ও নাকে অস্ত্রোপচার হয়। 


ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিত্সায় ব্যবহার করা হয় অ্যাম্ফোটিরিসিন-বি ইঞ্জেকশন। কিন্তু চাহিদা বাড়তেই বাজারে এই ইঞ্জেকশনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ। তাই রোগীদের বিকল্প ওষুধ হিসেবে, পোসাকোনাজোল ট্যাবলেট দিচ্ছেন কোনও কোনও চিকিৎসক। 


এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতর থেকে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও জেলা হাসপাতালে মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসা হবে। প্রত্যেক হাসপাতালকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসার ‘অ্যাপেক্স হাব’ করা হয়েছে এসএসকেএম-কে।‘আঞ্চলিক হাব’, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল ও বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ।


পাশাপাশি প্রত্যেক হাসপাতালকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস চিকিৎসার পরিকাঠামো বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সন্দেহজনক উপসর্গ থাকলে রোগীদের তথ্য জানাতে হবে স্বাস্থ্যভবনকে।