প্রদ্যোৎ সরকার, নদিয়া: ভুয়ো CBI অফিসার, ভুয়ো CBI-এর আইনজীবীর পর এই তালিয়া নতন সংযোজন আরও এক ভুয়ো IAS অফিসার। এই ‘ভুয়ো’ আইএএস অফিসারের হদিশ মিলল নদিয়ায়। পুলিশে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। কল্যাণীর এক ব্যক্তির থেকে সোয়া ২ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওই ভুয়ো আইএএস কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায় পলাতক। 


নদিয়ার কল্যাণীর বাসিন্দা এক যুবকের দাবি, সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় কৃষ্ণনগরের নলুয়াপাড়ার বাসিন্দা অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অচিন্ত্য নিজেকে IAS অফিসার বলে দাবি করে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন। সেই জন্য ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকাও নেন। কিন্তু চাকরিও মেলেনি, টাকাও ফেরত পাননি। 


ঘটনাকে নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর। বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের কথায়, সরকারি আধিকারিকদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার চলছে। এই সরকারের আমলে। কৃষ্ণনগর তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবাশিস রায় জানিয়েছেন, পুলিশ জানিয়েছে, মামলা রুজু হয়েছে।


কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের অভিযুক্ত ভুয়ো অফিসারের খবর প্রকাশ্যে আসার পরই কার্যত তোলপাড় রাজ্য। এর পরই একে একে সামনে এসেছে ভুয়ো পরিচয়ধারীদের নাম। সম্প্রতি হাওড়ার জগাছায় ভুয়ো সিবিআই অফিসারের খোঁজ মেলে। ভুয়ো সিবিআই অফিসারের পরিচয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠেছিল শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। 


পরিবারের দাবি, বি টেক পড়ার সময় শুভদীপ বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পান। সম্প্রতি সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অভিযোগ, সিবিআই অফিসার পরিচয়ে নকল পরিচয়পত্র বানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অনলাইন ইন্টারভিউ নিতেন শুভদীপ। এরপর ভুয়ো নিয়োগপত্রও দেওয়া হতো বলে অভিযোগ। এরপর দিল্লি থেকে পাকড়াও করা হয় হাওড়ার জগাছার ভুয়ো সিবিআই অফিসারকে। রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে অভিযুক্ত শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। 


একই ছবি হরিশ্চন্দ্রপুরেও। ভুয়ো ভ্যাকসিন, ভুয়ো সিবিআইয়ের পর কৃষি দফতরে চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠে কৃষি দফতরের ওই কর্মীর বিরুদ্ধে।


চাকরিপ্রার্থী যুবকের অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা ব্লকে কৃষি দফতরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বছর পাঁচেক আগে ৫ লক্ষ ৩৫ টাকা নেন ওই সরকারি কর্মী। পরীক্ষা করার পর জানা যায় নিয়োগপত্রটি ভুয়ো। এরপর থেকে একাধিকবার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলায় টালবাহানা শুরু করেন কৃষি দফতরের ওই কর্মী। টাকা ফেরত না পেয়ে গতকাল জেলা পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ওই চাকরিপ্রার্থী। অভিযুক্ত সরকারি কর্মীর বাড়িতে গিয়েও দেখা মেলেনি।


হুগলির চুঁচুড়া থেকেও গ্রেফতার করা হয়  মানবাধিকার সংগঠনের ভুয়ো অফিসার। রঞ্জন সরকার নামে ওই অভিযুক্তের পাশাপাশি, আরও চারজনকে আটক করা হয়। বাজেয়াপ্ত হয় নীল বাতি লাগানো চারটি গাড়ি ও চারটি মোটরবাইক। রাতে নাকা চেকিংয়ের সময় চুঁচুড়ায় জিটি রোড থেকে এক স্কুটার আরোহীকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই খোঁজ মেলে চুঁচুড়ার বাসিন্দা রঞ্জন সরকারের।