নদিয়া: কথায় আছে শেখার কোনও বয়স হয় না।
এবার বাস্তবেও সেটা প্রমাণ করলেন নদিয়ার হাঁসখালির বাসিন্দা বলরাম মণ্ডল ও কল্যাণী মণ্ডল।শুধু পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছের জোরে ছেলের সঙ্গে বসে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছেন এই দম্পতি।
হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে বলরাম মণ্ডল ১৯৯৭ সালে মাধ্যমিক দেন। কিন্তু, পাস করেননি।
সেই বছরই তাঁর বিয়ে হয়ে যায় কল্যাণীর সঙ্গে।
রোজগারের তাগিদে পড়াশোনা ছেড়ে কাজকর্ম শুরু করেন।
তবে ছেলে বিপ্লবের পড়াশোনায় যাতে কোনও খামতি না থাকে, সেজন্য চেষ্টার কসুর করেননি। নিজেরা আধপেটা খেয়েও ছেলে বিপ্লবকে স্কুলে ভর্তি করেছেন। আর তাকে পড়তে দেখেই বলরাম ও তাঁর মনে আবার পড়াশোনার ইচ্ছেটা জেগে ওঠে।
ভর্তি হয়ে যান রবীন্দ্র মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে।
২০১৩-১৪ সালে সেখান থেকেই মাধ্যমিক পাস করেন।
পরের বছর সেখান থেকে মাধ্যমিক পাস করেন বলরামের স্ত্রীও।
এরপর ছেলের সঙ্গেই হাঁসখালির হাজরাপুর হাইস্কুলে ভর্তি হয়ে যান।
প্রথমে মনে হয়েছিল, কে কী বলবে! কিন্তু, অদম্য ইচ্ছের কাছে সেসব চিন্তা পাত্তা পায়নি। বাবা-মা-ছেলে একসঙ্গেই দু’বছর স্কুলে গেছেন। ছেলে বিপ্লব প্রাইভেট টিউশন পড়ত। তারপর সে-ই বাবা-মাকে পড়াত।
উচ্চমাধ্যমিকে ছেলে বিপ্লব পেয়েছে ২৫৩।
মা কল্যাণী পেয়েছে ২২৮।
তবে আক্ষেপ একটাই। সব কাজ সামলে পড়াশোনা করেও বাবা বলরাম আর পাস করতে পারেননি। বলরাম বলেছেন,পরীক্ষার জন্য পরিশ্রম করেছি। কষ্ট লাগছে। রিভিউ করব। কেন ফেল করলাম বুঝতে পারিনি। পাসের আনন্দের মধ্যেও বাবার জন্য মন খারাপ ছেলের।
বিপ্লব এবং তাঁর বাবা-মায়ের পড়াশোনার তাগিদ দেখে উচ্ছ্বসিত তাঁদের স্কুলের প্রধান শিক্ষকও।
আপাতত মায়ের সঙ্গে উচ্চশিক্ষার পরামর্শ করতে ব্যস্ত বিপ্লব। দু’জনে একসঙ্গেই পড়াশোনা করার ইচ্ছে। করে দেখানোর এখনও অনেক বাকি।
ছেলের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে পাস মা, অকৃতকার্য শুধু বাবা
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
30 May 2017 07:18 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -