সুজিত মণ্ডল : শান্তিপুর পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে ভাগীরথীর ভাঙন। নদী গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে ৩০টারও বেশি বাড়ি। চরসারাগর ও গবার চর এলাকায় গতকাল বিকেল থেকে ভাগীরথীর ভাঙন শুরু হয়েছে। বসতবাড়ি থেকে কৃষিজমি ভাগীরথী ক্রমশ গিলছে সবকিছুই। আপাতত এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। কেউ কেউ রাস্তাতেই ত্রিপল টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কয়েকবছর ধরে এই এলাকায় ভাঙন চলছে। প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা চলে গিয়েছে ভাগীরথীর গর্ভে। প্রশাসনের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, সাধারণ মানুষের কথা ভাবার সময় নেই তৃণমূল সরকারের। ভাঙন-প্রবণ এলাকা হওয়ায় এই বিপত্তি সাফাই তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর বৃন্দাবন প্রামাণিকের। 


বাংলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছরই বর্ষার সময় ভয়াল রূপ ধারণ করে একাধিক নদী। গঙ্গা, ভাগীরথী, রূপনারায়ণ থেকে দামোদর, একাধিক নদী সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের দিন কাটাতে হয় আতঙ্কে। শান্তিপুরের মতোই মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে ভাঙনের কবলে বেশ কিছু এলাকা। তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, জমি। আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকে সরে গেছেন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আশ্রয়হীনদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ভোট বাকি থাকা সামশেরগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় ভাঙন নিয়ে সেখানেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর।


বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হকের মৃত্যুতে এই কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়ে যায় সামশেরগঞ্জে। ফলে এখনও এই কেন্দ্রে ভোট বাকি রয়েছে। তার আগে ভাঙন তীব্র আকার ধারন করায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। রাজ্যের প্রবল সমালোচনা করেছে বিজেপি। সামশেরগঞ্জ বিধানসভা মুর্শিদাবাদের মধ্যে হলেও তা মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। যে কেন্দ্রের সাংসদ কংগ্রেসের আবু হাশেম খান চৌধুরী। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার পাল্টা অভিযোগ করেছে তৃণমূল। তবে সামশেরগঞ্জ থেকে শান্তিপুর, সব জায়গাতেই স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, তরজা থামিয়ে ভাঙন রোধে পদক্ষেপ করুক প্রশাসন।