কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নে হিংসার প্রতিবাদে শুক্রবার ছ’ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছিল বামেরা। কিন্তু, সকাল ছ’টা থেকে বেলা বারোটা পর্যন্ত সেই ধর্মঘটে কোনও সাড়াই মিলল না।
আর পাঁচটা দিনের মতোই একেবারে স্বাভাবিক রইল জনজীবন। ধর্মঘট ব্যর্থ করে কাজে বেরোলেন সাধারণ মানুষ। শিল্পাঞ্চল থেকে সেক্টর ফাইভ, সর্বত্রই কর্মীদের হাজিরা ছিল স্বাভাবিক। সরকারি কর্মীদের উপস্থিতির হার ছিল অন্যদিনের মতোই। হাসপাতালের পরিষেবাতেও ধর্মঘটের প্রভাব পড়েনি। বেশিরভাগ জেলায় ধর্মঘট উপেক্ষা করে রাস্তায় বেরোয় সধারণ মানুষ। খোলা ছিল দোকানপাট।


কিছু জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা সামনে এসেছে। দুর্গাপুরে বাম সমর্থকরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। হাওড়ার দাশনগরেও রাস্তা অবরোধ করা নিয়ে বাম সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি বাধে। এরকম দু-একটি ঘটনা ছাড়া জনজীবন ছিল একেবারে স্বাভাবিক।
অনেকে বলছেন, মানুষ জানে ধর্মঘট করে কোনও সমস্যার সুরাহা হয় না। তাই তারা ধর্মঘট চায় না। বাম আমলে ধর্মঘটে রাজ্য স্তব্ধ হয়ে যেত ঠিকই। কিন্তু, সেটা যতটা না মানুষের ইচ্ছেয় নয়, তার থেকে বেশি রাষ্ট্রযন্ত্রের চাপে। এখন সময় বদলেছে। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, রাজপাট তো গিয়েছেই, বামেরা এখন রাজ্যে ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। এতটাই যে ধর্মঘটের দিন পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মীর হাওড়া ও বীরভূমে অভাবে বামেদের কর্মসূচিই বাতিল করতে হয়েছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অবস্থায় ধর্মঘট সফল করা সম্ভব নয় বুঝেই বামেরা ২৪ ঘণ্টা কিংবা ১২ ঘণ্টা থেকে নেমে এসেছে ৬ ঘণ্টায়। বারবার বলা হয়েছে এই ধর্মঘট প্রতীকী। তবে তাকেও একেবারে বুড়ো আঙুল দেখাল সাধারণ মানুষ। সিপিএম অবশ্য বলছে, ধর্মঘটের উদ্দেশ্য সফল। পাল্টা এনিয়ে কটাক্ষের সুর তৃণমূলের গলায়।
এদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, ১৬ এপ্রিল কলকাতায় মিছিল করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তাঁরা।