উত্তর ২৪ পরগনা: নোয়াপাড়ায় উপনির্বাচনের আগে তৃণমূলে ভাঙনের জল্পনা। এই কেন্দ্রের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মঞ্জু বসুর সঙ্গে সাক্ষাৎ মুকুল রায় এবং কৈলাস বিজয়বৰ্গীয়র।
২৯ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তার আগে এখন রাজ্য রাজনীতিতে ঘুরপাক খাচ্ছে তৃণমূলে ভাঙনের জল্পনা। কারণ দলের একাংশের প্রতি নোয়াপাড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মঞ্জু বসুর ক্ষোভের সুর। তিনি বলেন, সভা হচ্ছে আমাকে ডাকছে না। এটা আমার অপমান। আমার স্বামীর জীবনের প্রতি অপমান।
বিজেপি ইতিমধ্যেই দাবি করেছে, তৃণমূলের ঘর ভেঙেই তৃণমূলকে টক্কর দিতে চাইছে তারা। গত সেপ্টেম্বর মাসেই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, তৃণমূলের যারা বিক্ষুব্ধ বা প্রথম দিকের কর্মী। যারা ক্ষমতায় এনেছিলেন, এখন চুপচাপ বসে আছেন, তাদের পার্টিতে সামিল করার চেষ্টা করছি।
ইতিমধ্যে নোয়াপাড়ার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মঞ্জু বসুর সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। যদিও, এই সাক্ষাৎকে নেহাত সৌজন্যমূলক বলে দাবি করেছেন মঞ্জু বসু।
তবে বিজেপিতে যোগদান নিয়ে নিয়ে তিনি হ্যাঁ যেমন বলেননি, তেমন না-ও বলেননি। এই প্রশ্নে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বলেন, এখনই আপনাদের বলব না। ভবিষ্যৎ বলবে।
জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়ও। দিলীপ ঘোষের দাবি, পাকা কথা হয়নি। হলে জানতে পারবেন। মুকুল রায় বলেন, রাজ্যের সব বিধায়ক সাংসদই আসতে মুখিয়ে। অপেক্ষা করুন।
সূত্রের দাবি, মুকুলের সঙ্গে মঞ্জু বসুর সাক্ষাতের খবর চাউড় হতেই তাঁর মানভঞ্জনের চেষ্টা শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যে অবশ্য তৃণমূল নেতৃত্বের গলায় অন্য সুর। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ও যদি বিজেপিতে জয়েন করে ভুল হবে রাজনৈতিকভাবে।
মঞ্জু বসু প্রয়াত তৃণমূল নেতা বিকাশ বসুর স্ত্রী। ২০০০ সালের ২ এপ্রিল খুন হন নোয়াপাড়ার তৃণমূল কাউন্সিলর বিকাশ বসু। যে খুনের সঙ্গে তৃণমূলেরই একাংশ জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে। সিপিএম নেতা গৌতম দেবের অভিযোগ, অর্জুন সিংহ বিকাশ বসুকে খুন করেছিল। তিনি যোগ করেন, ওর স্ত্রী মঞ্জু বিজেপিতে গেলে ভুল করবে।
বিকাশ বসুর মৃত্যুর পর নোয়াপাড়া কেন্দ্র থেকে তাঁর স্ত্রী মঞ্জু বসুকে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০১ এবং ২০১১ সালে বিধায়ক হন মঞ্জু।
কিন্তু, ২০১৬ সালে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মধুসূদন ঘোষের কাছে ১ হাজার ৯৫ ভোটে হেরে যান তিনি। মধুসূদন ঘোষের মৃত্যুর পর এই কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ঘোষণা হয়েছে।
কিন্তু, মঞ্জু বসুর বদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ সুনীল সিংহ। এই প্রেক্ষিতে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মঞ্জু বসুর ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে কি তাঁকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ময়দানে নামাবে বিজেপি? উত্তরটা মিলবে আগামী দিনই।