পশ্চিম মেদিনীপুর ও দক্ষিণ দিনাজপুর:  রাজ্যেও র‍্যানসমওয়্যারের হামলা,  পশ্চিম মেদিনীপুরের পর দক্ষিণ দিনাজপুরের বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসেও কম্পিউটার বিপর্যস্ত। বিটকয়েন চেয়ে মুক্তিপণ দাবির বার্তা মনিটরে। বিপর্যস্ত পরিষেবা।

কম্পিউটার স্ক্রিনে ফুটে ওঠা বার্তা বলছে, কম্পিউটার আপনার, তথ্য আপনার। কিন্তু  কোনও কিছুই আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না।  রাজ্যেও এবার র‍্যানসমওয়্যার ভাইরাসের আতঙ্ক।

ক’দিন আগেই আশ্বস্ত করে সিআইডি জানায়, সাইবার হানা রুখে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের। কিন্তু সোমবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা ও নারায়ণগড়ে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দু’টি অফিসের কম্পিউটার খুলেই চমকে ওঠেন কর্মীরা!

দেখা যায় একাধিক বার্তা। যেখানে বলা হচ্ছে,

আপনার কম্পিউটারের ব্লক করা তথ্য যদি ফেরত চান, তাহলে মুক্তিপণ হিসেবে দিতে হবে ৩০০ ডলার। হাতে সময় মাত্র ৬ ঘণ্টা।

আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, স্পেন-সহ বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশের পর, সাইবার সন্ত্রাসের নিশানায় কি ভারতও?  তাহলে কি এ দেশেও ঢুকে পড়ল র‍্যানসমওয়্যার ভাইরাস? হ্যাকাররা হানা দিল বাংলাতেও?

চিন্তায় পড়ে যান কর্মীরা।

র‍্যানসমওয়্যার ভাইরাসের জেরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। বিপর্যস্ত ব্রিটেনের স্বাস্থ্য পরিষেবা।সংবাদমাধ্যমে সেই খবর দেখেছেন সবাই। কিন্তু এদিন সকালে যে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে, তা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি, বিদ্যুত্‍ বণ্টন সংস্থার কর্মীরা।

কিন্তু এটাই যে র‍্যানসমওয়্যার ভাইরাস, তা কীভাবে বোঝা যাবে?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইরের দেশগুলিতে যেভাবে তথ্য অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে, এক্ষেত্রেও মোডাস অপারেন্ডি অনেকটাই এক।

কী সেই মোডাস অপারেন্ডি?

সংস্থার কর্মীদের দাবি, বিট কয়েন কারেন্সি সিস্টেমের মাধ্যমে ৩০০ ডলার মুক্তিপণ জমা দিতে বলা হয়েছে উল্লেখিত অ্যাকাউন্ট নম্বরে।

বিশ্বের একাধিক দেশেও এই কায়দায় মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ মহলের মতে,

বেছে বেছে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, টেলিফোনের মতো পরিষেবা ক্ষেত্রগুলোকে নিশানা করছে হ্যাকাররা। যাতে সহজে আতঙ্ক তৈরি করে মুক্তিপণ আদায় করা যায়।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন,চারটি অফিসের কম্পিউটার হ্যাক হয়েছে। তবে তা কীভাবে হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে এমনটা নয়। কম্পিউটারগুলিকে ভাইরাসমুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসের এই ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। ঘটনার পর থেকেই পরিষেবা ব্যাহত বেলদা ও নারায়ণগড়ে বিদ্যুৎ অফিসে।