নোদাখালি (দক্ষিণ ২৪ পরগনা):  এখনও হাত থেকে ওঠেনি মেহেন্দির দাগ! সিঁথি ভর্তি সিঁদুর! সবে নতুন জীবন শুরু করেছিল অষ্টাদশী কিশোরী। কিন্তু শুরুতেই সব শেষ! গত ৮ মে নোদাখালির বাসিন্দা কুণাল অধিকারীর সঙ্গে দেখেশুনে বিয়ে হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনারই ফলতার বাসিন্দা কাকলি কয়ালের। আর বিয়ের ৯দিনের মাথায়, বুধবার শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার হল নববধূর দেহ!!
মাত্র আঠেরো বছরেই শেষ হয়ে গেল কাকলির জীবন! কাকলি তাঁর খাতায় লিখেছিলেন ‘নিরীহদের হত্যা করতে মানুষ অনেক সময় পশু হয়ে ওঠে...’ কী থেকে এই উপলব্ধি, তা জানা যায়নি। তবে যেটা জানা গিয়েছে, সেটা স্ত্রী হিসেবে মেনে নেওয়া কাকলি কেন যে কোনও কারোর কাছেই বড্ড কঠিন!
জানা গিয়েছে, অষ্টমঙ্গলার জন্য মঙ্গলবার স্বামীকে নিয়ে বাপেরবাড়ি গিয়েছিলেন কাকলি। বুধবারই শ্বশুরবাড়ি ফিরে যান। আর ওই দিনই উদ্ধার হয় বধূর দেহ। মৃতের পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ি ফিরে নিজের স্বামীকে তাঁর বৌদির সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেছিলেন কাকলি। তারপর বাপেরবাড়িতে ফোন করে সব জানান তিনি।
এরপরই কাকলির মৃত্যুর খবর পায় তাঁর বাড়ির লোকেরা। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর বিবাহবহির্ভুত সম্পর্ক জেনে ফেলাতেই খুন করা হয়েছে নববধূকে। আর প্রমাণ লোপাটে বধূর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মৃতের মা সীমা কয়াল বলেন, যারা আমার মেয়ের কোল খালি করল, তাগের সবার শাস্তি চাই, সত্য সামনে আসুক। শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। মৃতের পিসির দাবি, পণ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।
ছোট্ট মেয়েটা সংসারের স্বপ্ন দেখেছিল! মাথায় সিঁদুর, পায়ে আলতা, লাল বেনারসি পড়ে বাড়ি ছেড়েছিল, এক নতুন বাড়ির উদ্দেশে! কিন্তু, লাল বেনারসির জায়গায় আজ সাদা কাপড় ঢাকা বছর আঠারোর মেয়েটার দেহ!
মৃতের স্বামী কুণাল অধিকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।