কলকাতা: দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে পাশ হল বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব। আর এই প্রস্তাব পাশের পরই সুর চড়ালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "বিজেপির পক্ষ থেকে বিধান পরিষদ গঠনের বিরোধিতা করেছি। বিধান পরিষদের কার্যকরী করার ক্ষমতা বিধানসভার নেই। এই অর্থের অপচয় বন্ধ করতে হবে।" শুধু তাই নয়, তাঁর দাবি, শাসক ঘনিষ্ঠ যাঁরা ভোটে জেতেননি, তাঁদের পিছনের দরজা দিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে জানান, এই রাজনৈতিক উদ্দেশের বিরোধিতা করেছে বিজেপি।


রাজ্য মন্ত্রিসভায় বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব পাশ হয়েছিল আগেই। আজ, মঙ্গলবার বিধানসভায় দুই তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে পাশ হয়ে গেল বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব। এদিন ভোটাভুটিতে অংশ নেন মোট ২৬৫ জন বিধায়ক। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন ১৯৬ জন। আর বিপক্ষে ভোট পড়ে ৬৯টি। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "কর্মচারীদের ডিএ দিতে পারে না রাজ্য সরকার। রাজ্যে এখন পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ লক্ষ। ২ কোটি বেকার তৈরি হয়েছে রাজ্যে। এসএসসি-টেটে দুর্নীতি করা হচ্ছে। সেই কারণেই বিধান পরিষদ গঠনের বিরোধিতা করা হয়েছে। দেশের ৬ রাজ্যে বিধান পরিষদ থাকলেও ২৩ রাজ্যে নেই।" 


বিধান পরিষদের অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষকে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দিতেই উদ্যোগ। পাল্টা যুক্তি সরকার পক্ষের। উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে এরাজ্যে বিধান পরিষদের অবলুপ্তি ঘটে। বর্তমানে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানায় বিধান পরিষদ রয়েছে। বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, "কেন  বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ ও কর্ণাটকে কেন বিধান পরিষদ আছে?" সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব পাশের পর এবার তা রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে। সম্মতি মিললে তারপর এই প্রস্তাবকে সংসদের দুই কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভায় দুই তৃতীয়াংশ ভোটে পাশ হতে হবে। তারপর তা রাষ্ট্রপতির কাছে সম্মতির জন্য যাবে। রাষ্ট্রপতির সম্মতি মিললে তবেই গঠন করা যাবে রাজ্য বিধান পরিষদ।“