সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, পান্ডুয়া: ৯ বছরের ছোট মেয়েটি সাপের কামড়ে মারা গিয়েছিল আগেই। কিন্তু তাকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা ও তুকতাক চলতেই থাকে। মৃতদেহে পচন ধরলেও সেলাইন চালিয়ে চিকিৎসা করা হতে থাকে। এমনই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পান্ডুয়ায়।


স্থানীয় সূত্রের খবর, গত বুধবার সাপ কামড়ায় এলাকার রাজু সরেনের মেয়েকে। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী সে। কিন্তু কখন তাকে সাপে কামড়েছিল তা জানতে পারেনি কেউই। খন্যান মুলটি গ্রামে তাদের বাড়ি। সাপের বিষে কাবু হয়ে বাড়িতে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ৯ বছরের মেয়েটি। এরপরই তাকে খন্যান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। দু'দিন সেখানে ভর্তি থাকার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় বন্ডে সই করে বাড়ি নিয়ে চলে যায় মৃতার পরিবার। জিরাটের এক কবিরাজের থেকে ওষুধ নিয়ে এসে খাওয়ানো হয়। মৃতার বাবা রাজু সরেন জানান তারপর মেয়ে ভালই ছিল। খাওয়া দাওয়া করে খেলা করছিল। শুক্রবার অবস্থার আবার অবনতি হয়। কালনা বেলতলায় ওঝার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঝাড়ফুঁক করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসে। শনিবার রাতে মেয়ের মৃত্যু হয়। এরপর খন্যান স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকরা মৃত বলে জানিয়ে দেন। মৃতদেহ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়।


কিন্তু এরপর বাড়িতে নিয়ে এসে সেলাইন দেওয়া হয় মৃত্যুর পরেও। মৃতদেহ বাড়িতে রেখে ওঝার থেকে ওষুধ নিয়ে এসে তুকতাক চলতে থাকে। রবিবার বর্ধমানের রসুল পুরে ওঝার সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃতার পরিবার। সেখান থেকেও ওষুধ নিয়ে আসা হয়। এতদিন এভাবে থাকার ফলে মৃতদেহে পচন ধরে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে আজ পান্ডুয়া থানার পুলিশ মৃত ছাত্রীর বাড়িতে যায়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায় চুঁচুড়ায়। কুসংস্কার বশত মৃত মেয়ের চিকিৎসা করা হচ্ছিল বলে অনুমান পুলিশের।