সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: বৃষ্টি কমলেও এখনও জলবন্দি হুগলির পাণ্ডুয়ার গারোয়ানপাড়া অঞ্চল। রাস্তাঘাট থেকে ঘরবাড়ি, সর্বত্র থইথই করছে জল। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে কুড়িটি পরিবার। অপর্যাপ্ত নিকাশির অভিযোগে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীরা। চলছে রাজনৈতিক তরজা।
জমা জলে ডুবে গিয়েছে ঢালাই রাস্তা। সেই জল ঢুকে পড়েছে বাড়ির উঠোনে। এমনকি ঘরের ভিতরে পর্যন্ত। নোংরা জল থেকে বাঁচতে পায়ার নিচে ইট দিয়ে উঁচু করতে হয়েছে খাট। রান্নাঘর থেকে শোওয়ার ঘর, বাথরুম, এমন কোনও জায়গা নেই, যেখানে জল ঢোকেনি। জমা জলে ভেসে আসছে সাপ। জমা জলে সাপ মার্ক করতে হবে
কখনও তা ঢুকে পড়ছে গেরস্থের ঘরে। লাঠিতে তুলে সাপ ফেলছে মার্ক করতে হবে। এই ছবি হুগলির পাণ্ডুয়া ব্লকের বৈঁচি গ্রামপঞ্চায়েতের গারোয়ানপাড়ার। নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টির পর প্রায় দুসপ্তাহ কেটে গেলেও, এখনও জলবন্দি গারোয়ানপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা।
দুর্বিষহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ২০টি পরিবার। বৈঁচির বাসিন্দা শিক্ষক গোলকেশ্বর মণ্ডল, দীর্ঘদিনের এই সমস্যা বিধায়ক থেকে সাংসদ সবাই জানেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। জমা জলে রোগ জ্বালা হচ্ছে। সাপ মশার উৎপাত শুরু হয়েছে। জলের কল ডুবে যাওয়ায় পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না। এলাকায় পাকা নর্দমা রয়েছে। কিন্তু সেই নর্দমাই চলে গিয়েছে জলের তলায়! এই পরিস্থিতির জন্য নিকাশির সমস্যাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
বৈঁচি গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ও গারোয়ানপাড়ার বাসিন্দা আলোলিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় নিকাশির অভাবে সব বাড়িতে জল ঢুকে গেছে। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি সবাইকে জানানো হয়েছে। এভাবে আর কতদিন ভুগতে হবে জানি না। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ৮০০ ফুট দীর্ঘ পাকা নর্দমা তৈরির পরিকল্পনা থাকলেও, কাজ হয়েছে মাত্র দেড়শো ফুট।
পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অসিত চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, জমি জটের কারণে নিকাশির কাজ আটকে রয়েছে। দেড়শো ফুট কাজ হয়েছে। আরও কিছুটা কাজ হলে জল জমার সমস্য়া থাকবে না।
বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন পালের দাবি, ১০ বছর ধরে তৃণমূল ক্ষমতায়। এদেরই পঞ্চায়েত চলছে। পরিকল্পনার অভাবেই এই সমস্যা। আগে থেকে সব দিক দেখে নিয়ে কাজে হাত দিলে গ্রামবাসীরা হয়তো এই সমস্যায় পড়তেন না। ফি বছরের এই জলযন্ত্রণা থেকে কবেও তাঁরা মুক্তি পাবেন, স্থায়ী সমাধান চান বৈঁচির গারোয়ান পাড়ার বাসিন্দারা।