রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: জন বার্লার বিতর্কিত জমিতেই বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের পার্টি অফিস উদ্বোধন ঘিরে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। 


বানারহাটের চামুর্চি মোড়ে আলিপুরদুয়ারের সাংসদের বিতর্কিত জমিতে ঘটা করে উদ্বোধন করা হল বিজেপি সমর্থিত চা শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের পার্টি অফিসের। সেইসঙ্গে, ভবনের গায়ে টাঙিয়ে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির ছবি সহ বিশাল ফ্লেক্স। বেশ কয়েক বছর ধরেই চামুর্চি মোড়ের ওই জমিতে কোনও অনুমতি ছাড়াই নির্মাণকাজ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 


ইতিমধ্যে, জন বার্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যানী। এবার সেই বিতর্কিত জমিতেই তৈরি ভবনের ফিতে কেটে পার্টি অফিসের উদ্বোধন করেন বিটিডব্লিউইউয়ের ধূপগুড়ি ও বানারহাট ব্লক সভাপতি জয়রাম বিশ্বকর্মা। 


তাঁর সঙ্গে ছিলেন শ্রমিক সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তথা জন বার্লার ভাই ভিক্টর বার্লাও। এই প্রসঙ্গে শ্রমিক নেতা জয়রাম বিশ্বকর্মা বলেন, 'বানারহাটে আমরা একটা ছোট পার্টি অফিসে বসে কাজ করতাম। আজ এখানে বড় পার্টি অফিসের উদ্বোধন হল। এতে আগামীতে আরও বেশি করে উন্নয়নের কাজকর্ম এখান থেকে হবে। আগে মিটিং এর জন্য ভবন ভাড়া করতে হতো। আজ আমাদের নিজেদের পার্টি অফিস হল। এতে আমরা খুশি।'


তিনি আরও বলেন, 'আমাদের অভিভাবক জন বার্লা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন। এখন কাজ আর দায়িত্ব দুটোই বেড়েছে। তার জন্য বড় জায়গারও প্রয়োজন ছিল। জমি বিতর্কের বিরুদ্ধে এদিন সরব হন জয়রাম। তাঁর প্রশ্ন, এতদিন তৃণমূল কিছু বলেনি কেন? সাংসদ যখনই মন্ত্রী হলেন, এখন একটা ইস্যু দরকার। এখন এই ইস্যু তুলে রাজনীতি করতে চাইছে শাসক দল। গত দশ বারো বছর ধরে আমরা বিদ্যুতের বিল দিচ্ছি। জলের কানেকশনও আমাদের। শাসক দল যে অভিযোগ এনেছে, তাদের বলব, তাদের পার্টি অফিসগুলো কোথায় আছে, কোন জমিতে পার্টি অফিস খুলে নেতারা কাজ করছেন, ওটার দিকে আগে নজর দিক। তারপর আমাদের সমলোচনা করুক। তাঁর দাবি, বানারহাটে সরকারি জমিতে অনেকেই বসে আছে বাড়ি বানিয়ে।


তৃণমূলের বানারহাট ব্লক সভাপতি নয়ন দত্ত এই প্রসঙ্গে বলেন, 'ওটা প্রশাসনের জমি। প্রশাসন তদন্ত করে দেখবে। আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। জেলা নেতৃত্বকেও জানিয়েছি। আমরাও আন্দোলনে নামব। আমাদের প্রশ্ন, জন বার্লা দশ বছর আগে একজন চা বাগানের শ্রমিক ছিলেন। আর্থিক অবস্থাও খারাপ ছিল। এখন জন বার্লার কাছে ৫০০ কোটির সম্পতি কোথা থেকে এল, এটাই প্রশ্ন। পাশাপাশি বাংলা ভাগ নিয়ে আন্দোলন করেছেন এবং অনেকের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তাই আমাদের প্রশ্ন, অর্থ কোথা থেকে আসছে।