ঘাটাল (পশ্চিম মেদিনীপুর):  পারিবারিক বিবাদের আগুন কি পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে পারে রক্তের সম্পর্ককেও? ঘাটালে দুই কিশোর-কিশোরীকে ঘুমের মধ্যে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় এখন বড় হয়ে উঠছে এই প্রশ্নটাই। কারণ, এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ উঠেছে মৃতদের কাকার বিরুদ্ধে। অর্থাৎ রক্তের সম্পর্কেই রক্তারক্তি!
স্থানীয় সূত্রে দাবি, ঘাটাল থানার আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা হাসেম আলির সঙ্গে কিছুদিন ধরেই তাঁর ভাই ইসমাইলের পারিবারিক বিবাদ চলছিল। হাসেম কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন। ১৮ বছরের মেয়ে ও ১৫ বছরের ছেলেকে নিয়ে এখানে থাকেন তাঁর স্ত্রী ফতেমা। একটু দূরে অন্য বাড়িতে থাকেন হাসেমের ভাই ইসমাইল ও তাঁর পরিবার।
বৃহস্পতিবার রাতে ছেলে-মেয়েকে পাশে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন ফতেমা। বিছানার পাশের জানলা খোলা ছিল। অভিযোগ, সেখান দিয়ে বিছানায় কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন ইসমাইল।
মুহূর্তের মধ্যে আগুন গ্রাস করে ফতেমা বিবির ঘুমন্ত ছেলে-মেয়ের গোটা শরীর। আগুন লেগে যায় ফতেমার গায়েও। ইসমাইলের আক্রোশ কতটা ছিল, তা আরও স্পষ্ট হয়ে যায় এর পরের ঘটনায়। স্থানীয় সূত্রে দাবি, ফতেমা ও তাঁর সন্তানরা যাতে ঘর থেকে বেরোতে না পারে, সেজন্য বাইরে থেকে দরজায় তালা দিয়ে দেন ইসমাইল।
এমনকী, প্রতিবেশীদের বাড়ির দরজাতেও বাইরে থেকে তালা আটকে দেন ইসমাইল, যাতে তাঁরা কেউ ফতেমাদের বাঁচাতে না আসতে পারে। এক প্রতিবেশী বলেন, রাতে চিৎকার শুনে দরজা খুলতে গিয়ে দেখি বাইরে থেকে আটকানো। ভেঙে ঢুকি।
কাকার লাগানো আগুনে যন্ত্রণাটয় ছটফট করতে করতে ঘরের মধ্যেই মৃত্যু হয় ফতেমার ১৮ বছরের মেয়ে রেশমি এবং ১৫ বছরের ছেলে রাজীবের। ফতেমার শরীরের অনেকখানি অংশও পুড়ে যায়। দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল ও পরে সেখান থেকে এসএসকেএমে পাঠানো হয়।
এরপরই ক্ষিপ্ত প্রতিবেশীরা চড়াও হয় অভিযুক্ত ইসমাইলের বাড়িতে। তাঁর বাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রণক্ষেত্র পরিস্থিতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। যান ঘাটালের তৃণমূল বিধায়কও। ভাপো-ভাইজি খুনে অভিযুক্ত কাকা পলাতক।