আলিপুরদুয়ার: সমতলেও ছড়াচ্ছে অশান্তির আঁচ। আলিপুরদুয়ারে দফায় দফায় পুলিশ-মোর্চা সংঘর্ষ। অশান্তির শুরুটা হয়েছিল পাহাড়ে। সেই পাহাড়ি-পথ বেয়ে সেই আগুন এবার নামছে সমতলেও।
শনিবার উত্তপ্ত হয়েছিল সুকনা। আর এর পরদিনই পুলিশ ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ!
রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পৃথক রাজ্যের দাবিতে, গোপীমোহন ময়দান থেকে মিছিল বের করে মোর্চা। কিন্তু মোঙলাবাড়িতে ব্যারিকেড করে মিছিল আটকায় পুলিশ। শুরু হয় বচসা।
পুলিশের দাবি, সেই সময় বিক্ষোভকারীরা ইট ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ মিছিল সরানোর চেষ্টা করলে, আরও হিংসাত্মক হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীরা। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করেও মুড়িমুড়কির মতো ইট-পাথর ছোড়ে। মাথা ফাটে চালকের। পুলিশকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ।
কিছুক্ষণের জন্য পিছু হঠলেও, পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে পুলিশ। শুরু হয় বেধড়ক লাঠিচার্জ। তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আসরে নামানো হয় জলকামান। শেষমেষ লাগাতার কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে শুরু করে পুলিশ।
আহত হয় কয়েকজন বিক্ষোভকারী। মোঙলাবাড়িতে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও, সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় জমায়েত হওয়ার চেষ্টা করে মোর্চা কর্মীরা। পুলিশ টহল দিতে শুরু করলে, গুলতি হাতে তুলে নেয় আন্দোলনকারীরা। মুহুর্মুহু উড়ে আসতে থাকে পাথর!
একটি যাত্রীবাহি গাড়িও উল্টে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বিভিন্ন রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়। বন্ধ হয়ে যায় এলাকার দোকান পাট। গোটা ঘটনায় চরম আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা।
যদিও পর্যটনমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, সমতলে মোর্চা অশান্তি পাকাতে চাইলে তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, দুষ্কৃতীরা করছে। এরা রাজনৈতিক দল নয়। বাইরে থেকে অস্ত্র আমদানি করে ,পেট্রোল বোমা। গুণ্ডামি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এরকম আন্দোলনের কোনও ঠাঁই নেই। সমতলে এভাবে করতে দেব না। এবার কড়া হাতে দমন করবে সরকার।
পুলিশ-মোর্চা সংঘর্ষের পর থমথমে গোটা জয়গাঁ। পুলিশ সুপারকে নিয়ে টহল দেন জলপাইগুড়ি রেঞ্জের ডিআইজি। মোর্চার দাবি, তাদের এক সমর্থকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।