নয়াদিল্লি: ১৬ বছরের বোনকে বেচে দেওয়া হয়েছে দিল্লির সবথেকে বড় নিষিদ্ধ পল্লীতে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে আনলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দিদি।


হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি ডায়মন্ডহারবারের বাসিন্দা। এক যুবকের সঙ্গে তার আলাপ হয়। সেই যুবক নিয়মিত ফোন করত তার মায়ের ফোনে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মে মাসে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে বার করে আনে সে। সেখান থেকে কলকাতা হয়ে দিল্লি। ওই কিশোরীকে বিক্রি করে দেওয়া হয় রাজধানীর সবথেকে বড় নিষিদ্ধ পল্লী জিবি রোডে। ৫ মাস সেখানেই ছিল সে, নেশার ওষুধ খাওয়ানো হত রোজ, দিনে দুবার জুটত খাবার, প্রতিদিন শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করা হত অন্তত ২০ জনের সঙ্গে। কোনও খদ্দের অভিযোগ করলে উপোস করিয়ে রাখা হত। এছাড়া মারধর, সিগারেটের ছ্যাঁকা তো ছিলই।

একদিন এক খদ্দেরের ফোন থেকে মাকে ফোন করে মেয়েটি। জানায়, সে রয়েছে দিল্লির নিষিদ্ধ পল্লীতে। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। কিন্তু দিল্লি পুলিশের সাহায্যে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জিবি রোডে তল্লাশি চালালেও তাকে খুঁজে পায়নি। তখন এগিয়ে আসেন তার ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দিদি। মায়ের ফোনে যে ব্যক্তির ফোন এসেছিল, তাকে একবার ফোন করেই কেটে দেন তিনি। সে ফোন করে, উল্টোদিকে মহিলার গলা পেয়ে কথা বলতে থাকে। দিদি এমন করে কথা বলেন, যাতে মনে হয়, লোকটির প্রতি তাঁর আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সে তখন তাঁকে দিল্লি আসতে বলে, বলে, সব খরচ দেবে। নিজের ছবি পাঠায়, ঠিকানাও। সেই তথ্য মেয়েটি তুলে দেন পুলিশের হাতে, সেখান থেকে তা পায় দিল্লি পুলিশ।

পুলিশ তাকে আটক করলে ওই ব্যক্তি স্বীকার করে, পাচার হওয়া বাঙালি মেয়েটিকে চেনে সে, জিবি রোডের নিষিদ্ধ পল্লীতেই সে রয়েছে। পুলিশ ও দিল্লি মহিলা কমিশন সক্রিয় হয়ে ওঠায় ভয় পেয়ে যায় জিবি রোডের দালালরা। ডায়মন্ড হারবারে নিয়ে এসে মেয়েটিকে ছেড়ে দেয় তারা, দেয় ৩০০০ টাকাও। বলে দেয়, টাকা রোজগার করতে হলে ফের জিবি রোডে ফিরে যেতে।

আতঙ্কিত মেয়েটি এখন রয়েছে একটি হোমে, কাউন্সেলিং চলছে তার।