সনৎ ঝা, দার্জিলিং : বৃষ্টির জেরে কমে যাচ্ছে দৃশ্যমানতা। ব্যাপক প্রভাব পড়ছে বাগডোগরার উড়ান পরিষেবায়। তার জেরে বাতিল হচ্ছে ফ্লাইট। তার জেরে যেমন ভুগছে উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষ, তেমনই নাকাল হচ্ছেন পর্যটকরা। পশ্চিমবঙ্গের ট্যুরিজমের হৃদপিণ্ডই হল উত্তরবঙ্গ। সেখানে এভাবে বিমান পরিষেবা ব্যাহত হলে বাণিজ্যে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন উত্তরবঙ্গবাসী।
দীর্ঘদিনের এই সমস্যার সমাধান চেয়ে এবার কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে চিঠি দিলেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক। সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিও। সেই সঙ্গে এই মুশাকিল কে আসান করবে তাই নিয়েই দায় ঠ্যালাঠেলি শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো।
এবার উত্তরবঙ্গে বর্ষা এসেছে আগেই। ভারী বৃষ্টিপাত চলছে কয়েকদিন ধরে। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। জলপাইগুলি - কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা ভেসে গিয়েছে। সেই সঙ্গে দৃশ্যমানতা কমে গিয়েছে বাগডোগরায়।তারজেরেই বিপর্যস্ত শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরের পরিষেবা। বাগডোগরা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, ভারী বৃষ্টির জেরে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় গত ২৬ থেকে ২৯ জুন অবধি - ৪ দিনে ৮০টি বিমান পরিষেবা বাতিল করতে হয়।
যে ক’টি বিমান ওঠানামা করেছে, সেগুলিতেও বিস্তর দেরি। তার জেরে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ। বাগডোগরা বিমানবন্দর অবস্থিত শিলিগুড়িতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন , ভৌগলিকভাবে এর অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকেন নেক শিলিগুড়ি, উত্তর-পূর্বের গেটওয়ে । পর্যটন, থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাগডোগরা বিমানবন্দর। অথচ দৃশ্যমানতার সমস্যায় মাঝেমধ্যেই ব্যাহত হয় উড়ান পরিষেবা। বছর দুয়েক আগে, বাগডোগরা বিমানবন্দরে বসানো হয়েছিল ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম । কিন্তু, দীর্ঘদিন হল, সেই প্রযুক্তি বন্ধ বলে সূত্রের খবর। যার জেরে বাগডোগরা বিমানবন্দরে রাতে কিংবা ভোরের উড়ান পরিষেবা বন্ধ। বৃষ্টি হলে চূড়ান্ত দুর্ভোগ!! এরই সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবিতে,
কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে চিঠি লিখেছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ২ দিনে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বিমান পরিষেবা । হয় বাতিল হয়েছে, না হয় অন্য রুটে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, এর সুরাহা প্রয়োজন । এয়ারফোর্স কেন বন্ধ করল এই পরিষেবা., সেটা সমাধানের প্রয়োজন। শুভেন্দুকে চিঠি লিখেছি, তিনি যেন কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলেন, এটা উত্তরের সমস্যা।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিও এই দাবির সঙ্গে সহমত। দার্জিলিং কংগ্রেস জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারের অভিযোগ, এই সরকার এসে নজর দেয়নি, দীর্ঘদিন জমি নিয়ে টালবাহানা করেছে, কেন্দ্রেরও দেখা উচিত। আবার তৃণমূল নেতা রঞ্জন সরকারের অভিযোগ, এখানকার দার্জিলিংয়ের এমপি কী করছেন? তার তো দেখা উচিত, সমাধান করা উচিত অবিলম্বে।
শেষপর্যন্ত বাগডোগরা বিমানবন্দরে উড়ান পরিষেবা সচল রাখতে কেন্দ্রীয় সরকার কী পদক্ষেপ করে সেটাই এখন দেখার বিষয়।