সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: ভোটমুখী বাংলার সুপার ট্রেন্ডিং স্লোগান-গান ‘’খেলা হবে’’ ৷ স্লোগান তোলা থেকে গানের সুরে মেতে ওঠা ছিল সবই, এবার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কোমর দোলাতে দেখা গেল জন প্রতিনিধিকেও! নদিয়ার রানাঘাটে মতুয়াদের মহা-সম্মেলনে খেলা হবে গানে কোমর দোলালেন রানাঘাট উত্তর-পূর্বের বিধায়ক সমীর কুমার পোদ্দার।


শুক্রবার বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের মাঠে আয়োজিত হয়েছিল মতুয়াদের অনুষ্ঠান।  বিধায়কের উন্নয়নমূলক কাজের উপর লেখা গান গাইছিলেন শিল্পী। সেই গানের লাইনেও ছিল খেলা হবে! গান গাওয়ার সময় ভিড়ের মাঝখান থেকে বিধায়ককে সামনে ডেকে আনেন শিল্পী। এরপর খেলা হবে-র তালে মঞ্চ দাপিয়ে শুরু হয় বিধায়কের নাচ। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিতে দেরী করেনি বিজেপি।


বিজেপি কিষাণ মোর্চা নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘মতুয়াদের অপমান করা হয়েছে, তৃণমূল বাংলার মানুষের সঙ্গে যে খেলা হবে শুরু করেছে, তাই মন্ত্রীও তাই বলছে, কোন মঞ্চে কী বলতে হয়, সেই ধারনাটাই বিধায়কের নেই ৷’’


নাচের তালে মেতে ওঠার পর রানাঘাট উত্তর-পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সমীরকুমার পোদ্দার বলেন, ‘‘মতুয়ারা বলছে খেলা হবে বিজেপির বিরুদ্ধে। আমি তো মতুয়াদের অসম্মান করতে পারি না। তাঁরাই আমাকে টেনে নিয়ে গিয়ে অংশ নিতে বলেছে, ক্যাপটেন হতে বলেছে ৷’’


রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে ৪৫ শতাংশ মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস। তাঁরাই ওই কেন্দ্রের নির্ণায়ক শক্তি। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে প্রায় ১৫ হাজার ভোটে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী সমীরকুমার পোদ্দার।


কিন্তু, গত লোকসভা ভোটের বিধানসভাভিত্তিক ফল অনুযায়ী, রানাঘাট উত্তর-পূর্বে ৪৩ হাজার ২২৬ ভোটে এগিয়ে বিজেপি! বিজেপির লক্ষ্য এই ব্যবধান বিধানসভা ভোটেও ধরে রাখা। আর তৃণমূলের চ্যালেঞ্জ এই ব্যবধান ঘোচানো।


তৃণমূল ও বিজেপি দু’পক্ষই মতুয়া মন জয়ে মরিয়া। সবকিছুতেই তাই সংঘাত বাধছে। খেলা হবে নিয়েও চলছে চাপানউতোর।


এদিকে, বীরভূমের রামপুরহাটে খোদ কৃষিমন্ত্রীর ওয়ার্ডে ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে দেওয়াল লিখেছে বিজেপি। প্রচার চলছে কার্টুন ও ছড়ার মাধ্যমেও। রামপুরহাটের বিজেপি সম্পাদক বিপ্লব নাগ বলেন, ‘‘ক্ষমতায় আসলে কর্মসংস্থানই আসল খেলা। ভোটের ফল ঘোষণার পর গেরুয়া আবির নিয়ে খেলা হবে ৷’’


কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘বিজেপি স্লোগান ধার করলেও ভোটের বাজারে ওদের কোনও গুরুত্ব নেই। রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরছে তৃণমূল।’’


রাজনীতির খেলায় শেষপর্যন্ত কে বাজিমাত করে, তার উত্তর দেবে সময়।