অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: ভূটান পাহাড় থেকে বয়ে আসা খরস্রোতা পানা নদীর জলের তোড়ে ভেসে গেল পানা সেতুর প্রায় ১০০ মিটার। এর জেরে আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল সেন্টাল ডুয়ার্স চা বাগান-সহ ৪-টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। 


ভূটান পাহাড়ের প্রবল বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে কালচিনি ব্লকের পাহাড়ি নদী পানা। স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন ভোর রাতে নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে যায় পানা সেতুর প্রায় ১০০ মিটার অংশ। 


স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড়ি এই নদী তার গতিপথ পাল্টে সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের দিকে ঘেষে এই ঘটনা ঘটায়। এর ফলে কালচিনি থেকে সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা বাগানসহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে হাতিমারা, রাঙামাটি,  বাসরা গ্রাম। সমস্যায় পড়েছেন গ্রামের মানুষজন। 


কেউ চিকিৎসা করিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরছেন নদী পেরিয়ে। আবার কেউ করোনা আক্রান্ত আত্মীয়ের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার কাঁধে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ  পাহাড়ি খরস্রোতা নদী পারাপার করছেন বাধ্য হয়েই। 


ঘটনার খবর জানতে পেরে এলাকা পরিদর্শনে যান কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামা। তিনি বলেন, দিন সাতেক আগেই এই অংশ মেরামতের জন্য প্রশাসনকে জানিয়েও ছিলাম। সেন্ট্রাল ডুয়ার্সের সঙ্গে কালচিনির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে খাদ্যাভাব দেখা দেবে। দ্রুত ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের হাতে চিঠি দিয়ে আবেদন করেছি। 


কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, একটা অভিযোগ করেছেন বিধায়ক। গ্রাম পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে রিপোর্ট দিতে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাচ্ছি। সেখানকার মানুষের জন্য ত্রিপল, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বর্ষার পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলাও হয়েছে।


এদিকে, গত ২৪ ঘন্টার ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ফুলে ফেঁপে ওঠা চেল নদীর তীব্র জলস্রোতের ধাক্কায় বিপন্ন ক্ষুদিরামপল্লির গাইড বাঁধ। বাঁধটির ৩০ মিটার এলাকা জুড়ে মাটি ধসতে শুরু করে।


তীব্র আতঙ্কে ক্ষুদিরামপল্লির প্রায় ২৫০ পরিবার ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন, বাঁধ ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘটনাস্থলে একে একে এসে পৌঁছাতে শুরু করেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। 


উত্তেজিত ক্ষুদিরাম পল্লির বাসিন্দারা গ্রাম রক্ষা করার দাবি জানিয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন।