কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: করোনা আর লকডাউন, এই দুই শব্দের দাপটে বদলে গেছে আমাদের চারপাশ। বদলে গেছে প্রথাগত বিদ্যালয়ের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাও। ক্লাসরুমে মুখোমুখি বসে শিক্ষাদানের বদলে এসেছে ভার্চুয়াল ক্লাস। বাধ্য হয়ে গত এক বছর ধরে অনলাইন ক্লাসেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে পড়ুয়ারা। দীর্ঘ এগারো মাস বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহে খুলেছে স্কুলগুলি। তবে এখনও সব ক্লাসের পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি। শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারাই স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলছে ক্লাস। স্কুলে যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে ছোটদের মন খারাপ। কিন্তু শিশুরা সরস্বতী পুজোর আনন্দ দেওয়ার লক্ষে বর্ধমানের একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে আয়োজন করা হয় অনলাইনে পুষ্পাঞ্জলি। কচিকাঁচাদের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে। পুজো হচ্ছে স্কুল চত্বরে। স্কুলে প্রতিমা আনা হয়েছে,পুরোহিত মশাই পুজো করছেন। ফেসবুক ও জুম অ্যাপের মাধ্যমে লাইভ স্ট্রিমিং। বাড়িতে বসেই সরস্বতী পুজোর আনন্দ নেওয়া। এতো গেল পুজো দেখা। কিন্তু পুষ্পাঞ্জলি। তা থেকে যাতে শিশুরা বাদ না যায়, তার জন্য কয়েকজন করে গ্রুপে ভাগ করে দেওয়া হয় আইডি ও পাসওয়ার্ড। জুম অ্যাপের মাধ্যমে পড়ুয়ারা তাতে লগ ইন করে রীতিমতো সেজেগুজে পুরোহিত মহাশয়ের সঙ্গে মন্ত্র উচ্চারণ করে অনলাইনেই পুষ্পাঞ্জলি দেয়।
এই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ‘স্কুলের প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রী লাইভ এবং অনলাইন পুষ্পাঞ্জলীতে অংশগ্রহণ করেছিল। পুষ্পাঞ্জলি ভার্চুয়াল হলেও, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ-উদ্দীপনা ছিল আগের মতোই। শুধুমাত্র পার্থক্য বলতে পড়ুয়ারা সশরীরে বিদ্যলয়ে উপস্থিত না থেকে অনলাইনে স্কুলের পুজো দেখছে এবং পুষ্পাঞ্জলি দিচ্ছে।’
সরস্বতী পুজোর অভাবটা যাতে শিশুরা বুঝতে না পারে, তার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে পুষ্পাঞ্জলির সময় ছাত্র-ছাত্রীদের হাত থেকে ছুঁড়ে দেওয়া ফুল অনলাইনে বাগদেবীর পায়ে পৌঁছল কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল?