উত্তর ২৪ পরগনা: শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পর এবার দল ছাড়লেন শীলভদ্র দত্ত। তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দিলেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক।


দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে দলত্যাগ করেছেন শীলভদ্র। ছেড়েছেন সরকারি গাড়ি। যদিও, এখনও তিনি বিধায়ক পদে থাকবেন বলেও জানালেন শীলভদ্র।


শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহের জনসভায় শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই শীলভদ্রের থাকার সম্ভাবনা নিয়ে জোর জল্পনার মধ্যেই শুক্রবার তৃণমূলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করলেন শীলভদ্র।


সূত্রের দাবি, আগামী শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহ-র সভামঞ্চে শুভেন্দুর পাশে দেখা যেতে পারে শীলভদ্র দত্তকেও। সেদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন।


পাশাপাশি, এদিন শীলভদ্রর অফিসে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে লাগানো হয়েছে স্বামী বিবেকানন্দের ছবি। ব্যাক ড্রপে গেরুয়া রং। যদিও বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন দলত্যাগী বিধায়ক।


গত কয়েকদিন ধরেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করছিলেন শীলভদ্র। ফিরিয়ে দেন ভোট কুশলী পিকে-র টিমকে। সূত্রের খবর, এর মাঝে বেশ কয়েকবার শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন শীলভদ্র দত্ত।


গত লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর কেন্দ্রটি তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। এরপর থেকেই বেসুরো ব্যারাকপুরের বর্ষীয়ান বিধায়ক। কখনও ফেসবুকে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্টে লেখেন, দমবন্ধ হয়ে আসছে। মন চাইছে মুক্ত আকাশে মুক্তি।


কখনও ক্ষোভ তৃণমূলের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে। বলেন, ২০-২২ বছরে এসে যে একদিনের জন্য রাজনীতি করেনি, সে আমায় জ্ঞান দেবে মানতে পারছি না।


শীলভদ্রের মানভঞ্জনে তাঁর অফিস অবধি পৌঁছেছিল টিম পিকে। কিন্তু পত্রপাঠ তাঁদের ফিরিয়ে দেন বিধায়ক। সহকর্মীর বাড়িতে পৌঁছেছিলেন দলের জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। কিন্তু বিধায়কের দেখা পাননি!


গত লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভাওয়াড়ি ফল অনুযায়ী, শীলভদ্র দত্তর ব্যারাকপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৩ হাজার ৫১৯ ভোটে এগিয়েছিল বিজেপি। সে কারণেই কি ভোটের আগে শিবির বদল করতে পারেন শীলভদ্র?


বিজেপিতে যোগ দিলে কি তিনি ব্যারাকপুর থেকে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী হতে পারেন? মুকুল রায় তৃণমূলে থাকাকালীন তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন শীলভদ্র দত্ত।


শেষ অবধি তিনি দলবদল করলে তা হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের কাছে অস্বস্তির হতে পারে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।