উত্তর ২৪ পরগনা: দিনে-দুপুরে মধ্যমগ্রামে শ্যুটআউট। ১৫ রাউন্ড গুলি। সদ্য জেল থেকে ছাড়া পাওয়া দুষ্কৃতীর মৃত্যু। গ্যাংওয়ারের জের, অনুমান পুলিশের।
ঘটনার সূত্রপাত, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ। নিজের বাড়ির কাছেই একটি সেলুনে দাড়ি কাটতে গিয়েছিল, এলাকায় দুষ্কৃতী বলে পরিচিত প্রকাশ দে সরকার ওরফে ঢাকাই গৌতম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সে সময় সেলুনে বাইক নিয়ে চড়াও হয় হেলমেটে মুখ ঢাকা ৮-৯ জন দুষ্কৃতী। হুড়মুড়িয়ে সেলুনে ঢুকে শাটার নামিয়ে দেয় তারা! পুলিশ সূত্রে দাবি, সেলুনে অন্তত পনেরো রাউন্ড গুলি চালানো হয়! গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঢাকাই গৌতমকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সিন্ডিকেটের দখলদারি নিয়ে গ্যাংওয়ারের জেরেই ঘটনা। হামলার পর বোমা-গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। শ্যুটআউটের নেপথ্যে যে সিন্ডিকেট নিয়ে গণ্ডগোল, তা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর প্রকাশ রাহাও। দলের নেতাদের মদতের বিষয়টিও স্বীকার করেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকায় দুষ্কৃতী বলে পরিচিতি ছিল মৃত প্রকাশ দে সরকার ওরফে ঢাকাই গৌতম। সিন্ডিকেট-প্রোমোটিং-জমি কেনাবেচার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল সে। পুলিশ জানিয়েছে, মাদক মামলায় জেলেও ছিল ঢাকাই গৌতম। কয়েকদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পায় সে। তারপরই এই ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি একটি জমি নিয়ে এক প্রোমোটারের সঙ্গে বিবাদে জড়ায় ঢাকাই গৌতম। কয়েকদিন আগে কুরু নামে এক প্রোমোটার একটি জমিতে প্রোমোটিং শুরু করে। তা নিয়ে গৌতমের সঙ্গে বিবাদ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ২০১৫ সালে মধ্যমগ্রাম জোড়া হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত পদ-র সঙ্গে ঢাকাই গৌতমের দীর্ঘদিনের বিবাদ।
গতবছর মৃত্যু হয় পদ-র। পুলিশ সূত্রে দাবি, এরপর এলাকায় সিন্ডিকেটের দখল চলে যায় পদ-র ভাগ্নে টুবাইয়ের হাতে। যা নিয়ে টুবাই ও ঢাকাই গৌতমের বিবাদ চরমে ওঠে। বছর খানেক আগে নিজের অফিসেই গুলিবিদ্ধ হয় গৌতম।
এদিনের শ্যুটআউটের ঘটনাতেও টুবাই ও তার দলবলের নামে থানায় FIR করেছে মৃতের পরিবার। উত্তর ২৪ পরগনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অভিযোগ হয়েছে, মামলা রুজু করেছে পুলিশ, একজনকে আটক করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্যুটআউটের জন্য সুপারি কিলারদের ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র ও হামলাকারীদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।