বিটন চক্রবর্তী, তমলুক: তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। কিন্তু এবার তাঁকেই অপসারিত করা হল। স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি বিজরিত তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির সভাপতির পদ থেকে এবার অপসারিত করা হল শুভেন্দু অধিকারীকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়ে আলোচনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত শনিবারই বিধানসভা ভোটে জয়ী নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থীকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। এদিকে এই ঘটনায় বিজেপির তরফ থেকে কটাক্ষ করা হচ্ছে।


আটের দশকে প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন সুশীল ধাড়া। তিনিই তমলুকের নিমতৌড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতি রক্ষার্থে গড়ে তুলেছিলেন তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি স্মৃতি সৌধ। বর্তমানে সেই সমিতির সদস্য সংখ্যা ৬৮।


২০১২ সাল থেকে সেই কমিটির সভাপতি পদে ছিলেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত বিধানসভা ভোটের আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু।  শনিবার তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে একটি সভা ডেকে শুভেন্দুকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যদিও এই নিয়ে বিজেপির তরফ থেকে শাসক দলের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে।


তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি স্মৃতি সৌধ কমিটির সদস্যদের তরফে বলা হয়েছে, সর্বসম্মতিক্রমে সেই সমিতির সভাপতি করা হয়েছে রাজ্যের সেচ মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রকে।


তবে এই নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু জবাব দিয়েছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, রাজ্যের শাসকদল সব কিছুতেই রাজনীতি দেখছেন। ভোট পরবর্তী সময়ে তৃণমূল ও বিজেপি ২ দলের মধ্যে কোন্দল এখনও অব্যাহত। 


সমিতির নতুন সভাপতি সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই এই সমিতির তরফে কোনও বৈঠক করা হয়নি। ৬ জুলাই শুভেন্দুর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি স্মৃতি সৌধ স্বাধীনতা সংগ্রামের পীঠস্থান। আমরা অন্যান্য দেশের কাছেও এই সমিতির ব্যাপারে তুলে ধরতে চাই। আগামীতেও কোভিড বিধি মেনে যাবতীয় কার্যকলাপ সম্পন্ন হবে।’


এদিকে বিজেপি তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি তপন বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। শুভেন্দু অধিকারী একজন উন্নয়নের কাণ্ডারি। কিন্তু তাঁকে এভাবে অপমান করে সরিয়ে দেওয়া হল। শুভেন্দু মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র। এইরকম কাজ কখনওই কাম্য নয়।’